বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খাঁটি মধুও কি জমে

  •    
  • ৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১২:৪৫

খাঁটি মধুও কেন জমে যায়, তার কারণ ব্যাখ্যা করে রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মৌ বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ‘পৃথিবীতে যত মধু রয়েছে তার প্রায় সবগুলোর জমে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। কোনো কোনো মধু খুব দ্রুত জমে যায়; কোনো কোনো মধু জমতে সময় লাগে।’

বাজার থেকে বোতলজাত মধু কিনে কিছুদিন পর জমতে দেখলে অনেকের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তারা মনে করেন মধুতে নিশ্চয়ই ভেজাল আছে। আদতে বিষয়টি তা নাও হতে পারে।

মধু কেন জমে, তা জানতে নিউজবাংলা কথা বলেছে চট্টগ্রামভিত্তিক মধু গবেষক ও মধু জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ মঈনুল আনোয়ারের সঙ্গে।

১৫ বছরের বেশি সময় ধরে মধু নিয়ে গবেষণা করা মঈনুল আনোয়ার প্রশ্নটির সরাসরি উত্তর না দিয়ে ইমেইলে দেশ-বিদেশের কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতামত পাঠান।

খাঁটি মধুও কেন জমে যায়, তার কারণ ব্যাখ্যা করে রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মৌ বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ‘পৃথিবীতে যত মধু রয়েছে তার প্রায় সবগুলোর জমে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। কোনো কোনো মধু খুব দ্রুত জমে যায়; কোনো কোনো মধু জমতে সময় লাগে।

‘মধুর জমা মূলত নির্ভর করে মধুতে বিদ্যমান আর্দ্রতা, তাপমাত্রা এবং উৎসের ওপর। একই সঙ্গে মধুতে বিদ্যমান গ্লুকোজের পরিমাণের ওপরও এটি নির্ভর করে। যেসব মধুতে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি, সাধারণত সেসব মধু দ্রুত জমে যায়।’

জমে যাওয়া মধু নিরাপদ কি না, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মধু জমে যাওয়াটা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। জমে যাওয়া মধু সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং এতে সব ধরনের গুণগত মান অটুট থাকে।

‘কোনো কারণে মধু জমে গেলে তা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১৫ মিনিট যদি রেখে দেয়া হয়, তাহলে সেটি আবার আগের তরল অবস্থায়, অর্থাৎ লিকুইড ফরমে চলে আসবে।’

মধু জমে যাওয়া নিয়ে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আহসানুল হক স্বপন বলেন, ‘মধুতে প্রধানত চার ধরনের সুগার থাকে। এগুলো হলো ফ্রুকটোজ, গ্লুকোজ, সুক্রোজ ও ম্যালটোজ। সরিষার মধুতে দ্রুত জমে যাওয়ার বৈশিষ্ট্যটি উল্লেখযোগ্যভাবে পরিলক্ষিত হয়। সরিষার মধুতে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের অনুপাত প্রায় সমান সমান। অর্থাৎ সুন্দরবনের মধুর চেযে সরিষার মধুতে বেশি গ্লুকোজ থাকে।

‘ফ্রুকটোজের চেয়ে কম দ্রবণীয় গ্লুকোজ। পাকা সরিষার মধুতে পানির পরিমাণ কম থাকে। শীতকালে সরিষার মধু সংগ্রহ করা হয় বলে তাপমাত্রাও কম থাকে। এসব কারণে পাকা সরিষার খাঁটি মধু জমে যায়। আর এই জমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক ও ভালো সরিষার মধু নির্দেশ করে।’

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘বেয়ার হানি’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডাস্টিন ভ্যানেস বলেন, “মধুর ক্রিস্টালাইজেশন বা স্ফটিকায়ন একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এর মানে এই নয় যে, মধুতে ভেজাল মেশানো হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মধু ভিন্ন ভিন্ন অনুপাতে জমে যেতে পারে। এর মূল কারণ মধুতে থাকা খনিজ উপাদানগুলো।

“প্রায়ই দেখা যায়, কালো বর্ণের মধুগুলো হালকা বর্ণেরগুলোর চেয়ে দেরিতে জমাট বাঁধে। এ জমাট বাঁধার কারণ হলো ‘সুপার স্যাচুরেটেড দ্রবণ’ নামের একটি প্রক্রিয়া।”

এ খাদ্য নিরাপত্তা ও মান বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘মধুর দুটি অংশ—পানি ও চিনি। চিনি কঠিন পদার্থ। মধুতে ফ্রুকটোজের পরিমাণ বেশি থাকলে তা জমাট বাঁধতে শুরু করে, বিশেষ করে পাত্রের তলানিতে।’

এ বিভাগের আরো খবর