গাছমাত্রই উপকারী। তবে উপকারিতার দিক থেকে নিমগাছ অনন্য। এটি একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন, চিরহরিৎ বৃক্ষ। পাতা থেকে মূল পর্যন্ত এ গাছের আগাগোড়া প্রায় পুরোটাই কাজে লাগানো যায়।
এর কাঠও অত্যন্ত টেকসই হয়। নিমগাছের কাঠে তৈরি আসবাবে ঘুন বা উইপোকা আক্রমণ করতে পারে না। হেলথলাইন ডটকমের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে নিমের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারের কথা।
চুলের যত্নে
নিমের বীজের নির্যাসে অ্যাজাডিরেকটিন নামক একটি পদার্থ থাকে, যা চুলে উকুনসহ অন্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এ পদার্থটি উকুনের মতো পরজীবীর বৃদ্ধি ব্যাহত করার পাশাপাশি এদের প্রজনন ও অন্য সেলুলার প্রক্রিয়া রোধ করতে ভূমিকা রাখে। নিমের তেল চুলের খুসকি দূর করতেও কার্যকর।
ত্বকের যত্নে
নিম তেলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এর পাশাপাশি নিমে থাকা ওলেইস, প্লামিটিক এবং লিনোলেইস অ্যাসিডের মতো পদার্থ, যা ত্বকের যত্নে অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া এর অ্যান্টি-অনফ্লেমেটোরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল পদার্থ ত্বককে অ্যালার্জি এবং র্যাশসহ অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে।
নিমপাতা ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের আক্রমণ থেকেও ত্বক সুরক্ষিত রাখে। ব্রণের সমস্যা থাকলে নিমপাতার পেস্ট লাগালে উপকার পাওয়া যাবে।
মুখ ও দাঁতের যত্নে
নিমের অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটোরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মুখ ও দাঁতের যত্নে অত্যন্ত কার্যকর। নিম ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের গোড়া মজবুত হওয়ার পাশাপাশি মাড়ি থেকে রক্ত পড়াও কমে যায়।
মুখের দুর্গন্ধেও নিমের কার্যকারিতা রয়েছে। নিম দাঁতের ফাঁকে জন্ম নেয়া ব্যাকটেরিয়া নিধন করে, ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয় না।
কাটাছেঁড়া
শরীরের কোথাও কোনো কারণে কাটাছেঁড়া, ক্ষত বা পুড়ে গেলে নিমপাতার রস ভেষজ হিসেবে কাজ করে। প্রাথমিকভাবে ক্ষতস্থানে নিমের রস লাগালে রক্তপড়া বন্ধ হবে। পাশাপাশি ক্ষতস্থান দ্রুত সারিয়ে তুলতেও এই রস কাজ করে।
মুখের উজ্জ্বলতা
নানা কারণে চেহারা অনুজ্জ্বল হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিমপাতার পাউডার বেশ কার্যকর। কিছু নিমপাতা রোদে শুকিয়ে পাউডার বানিয়ে নিন। পরে এগুলো ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে চেহারার ক্লান্তিভাব ও অনুজ্জ্বলতা দূর হবে এবং আরও সতেজ দেখাবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও লিভারের সমস্যা
প্রতিদিন অল্প পরিমাণ নিমপাতার রস খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্যসহ লিভারের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। পাশাপাশি এ রস রক্ত পরিশোধন করতেও কাজ করে। শরীর থেকে বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক উপাদান বের করে দেয়। তাই সুস্থ থাকতে নিম রসের জুড়ি নেই।