বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অ্যাজমা কমায় ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি!

  •    
  • ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৭:২৫

বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, হাঁপানির ক্ষেত্রে টি-সেলের আচরণ ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে। তবে উল্টোদিকে টি-সেলের এই আচরণ মস্তিষ্কে টিউমারের বিস্তারে বাধা দেয়।

অ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্তদের জীবনে যন্ত্রণার শেষ নেই, অনেক ক্ষেত্রে এটি হতে পারে প্রাণঘাতী। আর তাই বিভিন্ন ধরনের নিয়ন্ত্রিত জীবনের মধ্যে থাকতে হয় অ্যাজমা রোগীদের।

মন খারাপ করা এসব তথ্য আমরা সবাই জানি। তবে এবার অ্যাজমার বিষয়ে কিছুটা ‘আশ্বস্ত’ হওয়ার খবর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

তারা বলছেন, অ্যাজমা আক্রান্তদের মস্তিষ্কে টিউমারের ঝুঁকি অনেকটাই কম। এর কী কারণ, সেটিও খুঁজে পাওয়া গেছে গবেষণায়।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞদের গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

অ্যাজমা রোগীদের মস্তিষ্কে টিউমার আক্রান্ত না হওয়ার প্রবণতা দেড় দশক ধরেই লক্ষ করছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তবে মগজের সঙ্গে শ্বাসতন্ত্রের এ সংক্রান্ত যোগসূত্রটি এতদিন শনাক্ত করা যায়নি।

এবার সেই রহস্যের সমাধান মিলেছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের টিউমার ও অ্যাজমার মধ্যে যোগসূত্রটি তৈরি করেছে রক্তের মধ্যে থাকা রোগপ্রতিরোধী কোষ- টি-সেল।

অ্যাজমার সময়ে সক্রিয় হয় এই টি-সেল। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, হাঁপানির ক্ষেত্রে টি-সেলের আচরণ ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে। তবে উল্টোদিকে টি-সেলের এই আচরণ মস্তিষ্কে টিউমারের বিস্তারে বাধা দেয়।

গবেষকেরা মনে করছেন, যোগসূত্রটি খুঁজে পাওয়ায় মস্তিষ্কের টিউমার চিকিৎসায় নতুন পথ খুলবে। অ্যাজমা রোগীর ক্ষেত্রে টি-সেল যেভাবে আচরণ করে সেটা মস্তিষ্কে টিউমার ঠেকাতেও ব্যবহার করা সম্ভব।

গবেষণাপত্রের এক লেখক স্নায়ুবিদ্যার অধ্যাপক ডেভিড এইচ গুটম্যান বলছিলেন, ‘আমরা অবশ্যই কারও মধ্যে অ্যাজমা ছড়িয়ে দিতে বলছি না। তবে মস্তিষ্কের টি-সেলগুলোকে বিশেষ কৌশলে অ্যাজমার সময়কার আচরণে উদ্বুদ্ধ করা গেলে এরা মস্তিষ্কে টিউমারের গঠন ও বৃদ্ধিকে প্রতিহত করবে।’

সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় অপটিক নার্ভ টিউমারের বিকাশে রোগপ্রতিরোধী কোষের ভূমিকা প্রমাণিত হয়েছে। আর সেখান থেকেই অ্যাজমা ও মস্তিষ্কের টিউমারের মধ্যে রোগপ্রতিরোধী কোষের সম্ভাব্য যোগসূত্র যাচাই করে দেখেছেন গুটম্যান ও তার দল।

গবেষক দলটি কিছু ইঁদুরের দেহের এনএফওয়ান জিনে একটি মিউটেশন ঘটান। মাস তিনেকের মধ্যেই এসব ইঁদুরের অপটিক নার্ভে টিউমার ধরা পড়ে।

এরপর এসব ইঁদুরের একাংশকে অ্যাজমাতেও আক্রান্ত করা হয়। বেশ কিছু দিন পর্যবেক্ষণের পর দেখা গেছে, যেসব ইঁদুরের অ্যাজমা হয়েছে তাদের মস্তিষ্কের টিউমার ছড়ায়নি। অন্যদিকে, যেসব ইঁদুরের অ্যাজমা হয়নি তাদের টিউমার ক্রমেই বড় হয়েছে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, টিউমার-প্রবণ ইঁদুরের অ্যাজমা হওয়ার পর এদের টি-সেলে আচরণগত পরিবর্তন আসে। অ্যাজমার পর টি-সেল ডেকোরিন নামের একটি প্রোটিন নিঃসরণ শুরু করে।

ডেকোরিন অ্যাজমার সময় শ্বাসনালিকে সংকুচিত করে এবং হাঁপানির উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। তবে এই প্রোটিন আবার মস্তিষ্কের জন্য উপকারী বলে প্রমাণ মিলেছে গবেষণায়।

ডেকোরিন মস্তিষ্কের রোগপ্রতিরোধী কোষ- মাইক্রোগ্লিয়ার সক্রিয়তা নিয়ন্ত্রণ করে। এই মাইক্রোগ্লিয়ার সক্রিয়তার কারণেই মস্তিষ্কে টিউমারের বিকাশ ও বিস্তার ঘটে থাকে।

গবেষণার ফলাফলে দারুণ উচ্ছ্বসিত গুটম্যান। তিনি বলছেন, ‘সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ অংশটি হলো, শরীরের টি-সেল এবং মস্তিষ্কের বিশেষ কোষের মধ্যে একটি স্বাভাবিক যোগসূত্র রয়েছে। মস্তিষ্কের এই বিশেষ কোষ টিউমার সৃষ্টি ও বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। প্রক্রিয়াটি বুঝতে পারার ফলে নতুন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি বের করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর