বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দিনটি মাইক্রোওয়েভ ওভেনের

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৯:৪৯

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামায় গোটা বিশ্ব যখন উদ্বিগ্ন মাইক্রোওয়েভকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে রান্না করা যায়, তা নিয়ে নিমগ্ন গবেষণা করছিলেন এক প্রকৌশলী। তার নাম পার্সি স্পেন্সার। তারপর নানা গবেষণা পেরিয়ে, ১৯৬৭ সালে বাজারে ছাড়া হয় রান্নার উপযোগী ওভেন।

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ তার শক্তি হারিয়ে রূপ নিয়েছে নিম্নচাপে। কিন্তু তার প্রভাব আছে প্রকৃতিতে। সারাদিন ধরে ঝরছে বৃষ্টি। বৃষ্টিস্নাত এমন দিনে আলস্যকে পিছনে ফেলে অনিচ্ছাতেও কাজে গেছেন অনেকে।

কিন্তু কাজ শেষে অঘ্রাণের বৃষ্টি গায়ে মেখে যারা ঘরে ফিরবেন, তাদের অনেকের রান্নার ইচ্ছেটা তখন উবে যাবে। অগত্যা ফ্রিজ খুলে ঠান্ডা খাবার গরম করে খেয়ে নেয়া ছাড়া আর উপায় কী! তখনই ভরসার নাম মাইক্রোওয়েভ ওভেন।

রান্নাঘরের প্রভাবশালী এই সরঞ্জামটি জীবনকে অনেক সহজ করেছে। আর তাই প্রতি বছরের ৬ ডিসেম্বরকে বেছে নেয়া হয়েছে মাইক্রোওয়েব ওভেন দিবস উদযাপন।

এই নাগরিক ব্যস্ত জীবনে ঠান্ডা খাবার গরম করে নেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় মাইক্রোওয়েভ ওভেন। চকলেট কিংবা মাখন গলানো, পানি গরম করা, কেকসহ নানা উপাদেয় খাবার তৈরিতে এই যন্ত্রটির জুড়ি মেলা ভার।

প্রচলিত ওভেনের চেয়ে মাইক্রোওয়েভ ওভেনের চাহিদাটা বেশি। তার মূল কারণ, মাইক্রোওয়েভে শক্তি অপচয় হয় অনেক কম। যা কখনও কখনও ৮০ শতাংশ কম।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামায় গোটা বিশ্ব যখন উদ্বিগ্ন মাইক্রোওয়েভকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে রান্না করা যায়, তা নিয়ে নিমগ্ন গবেষণা করছিলেন এক প্রকৌশলী। তার নাম পার্সি স্পেন্সার। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তার ছিল না। স্বশিক্ষিত প্রকৌশলীর তকমা তিনি ঠিকই পেয়েছেন।

১৯৪৫ সালে রেথিয়ন নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন স্পেন্সার। অ্যাক্টিভ রাডার নিয়ে কাজ করার সময় হুট করে টের পেলেন পকেটে থাকা একটি ক্যান্ডিবার গলে যাচ্ছে।

ওই ঘটনা নতুন করে ভাবতে শেখাল তাকে। মাইক্রোওয়েভকে কাজে লাগিয়ে পপকর্ন তৈরি করলেন তিনি। এরপর মাথায় এল ডিম রান্নার কথা। চেষ্টাও করলেন। কিন্তু পপকর্নে যতটা সাফল্য পেলেন, ডিমের ক্ষেত্রে ততটাই ব্যর্থ। ব্যর্থতাকে উপহাস করলেন তার সহকর্মীরা, তারা তাকালেন বাঁকা চোখে।

তুচ্ছ, তাচ্ছিল্যে দমবার পাত্র ছিলেন না স্পেন্সার। এক পর্যায়ে ধাতব বাক্সের মধ্যে ম্যাগনেট্রনের শক্তি উৎপন্ন করে, তা আটকে রাখতে সক্ষম হন তিনি। দেখলেন, ওই বক্সে রাখা খাবার দ্রুত গরম হয়ে যাচ্ছে।

স্পেন্সারের সাফল্যের পর ১৯৪৫ সালের ৮ অক্টোবর মাইক্রোওয়েভ ওভেনের পেটেন্ট জমা দেয় রেথিয়ন। ১৯৪৭ সালে রাডারেঞ্জ মাইক্রোওয়েভ নিয়ে আসে তারা। যা প্রায় লম্বায় ছয় ফুট। মূল্য ধরা হয় পাঁচ হাজার ডলার।

১৯৫৫ সালে টাপ্পানের সঙ্গে নিজেদের পেটেন্ট আউটসোর্স করে রেথিয়ন। তারা এক হাজার ২৯৫ ডলারের মধ্যে একটি ওভেন তৈরি করে। তবে সেটা গার্হস্থ্য ব্যবহারের উপযোগী ছিল না।

তারপর নানা গবেষণা পেরিয়ে, ১৯৬৭ সালে ৪৯৫ ডলারে একটি কাউন্টারটপ মাইক্রোওয়েভ ছাড়ে রেথিয়ন। তার কিছুদিনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান লিট-অন বাজারে আনে মাইক্রোওয়েভ ওভেন। সেই ডিজাইনটি আসলে মানুষ গ্রহণ করেছে। আজকের আধুনিক সময়েও যেসব ওভেন দেখা যায়, তার সবকটা লিটঅনের ডিজাইন অনুযায়ী।

১৯৭১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ হাজার মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারকারী পাওয়া যায়। কিন্তু তার চার বছরের মধ্যে অর্থ্যাৎ ১৯৭৫ সালে এসে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ লাখে।

মাইক্রোওয়েভ ওভেনকে শুধু কেক বানানো আর খাবার গরমের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কিছু নেই। ন্যাশনাল ডে ক্যালেন্ডার ডটকম বলছে, ক্রিসপি ব্যাকন, চকোলেট গলানো, সবজি সিদ্ধ, বাদামী চিনি নরম করা, হার্বস শুকিয়ে নেয়া এবং কাঁচের বৈয়ামে সেঁটে দেয়া লেবেল উঠিয়ে নিতেও ওভেন খুব কাজের যন্ত্র।

তবে যাই করুন না কেন, ওভেন পরিষ্কার রাখাটাও গুরুত্বপূর্ণ। তার জন্যও আছে টোটকা। গরম সাবান জলে তোয়ালে ভিজিয়ে মুছে নিন ওভেন। তাতে বিভিন্ন স্থানে লেগে থাকা খাদ্য কণা বা ময়লা উঠে আসবে অনায়াসে। তারপর শুকনো সুতির কাপড় দিয়ে আবার মুছে নিন।

এ বিভাগের আরো খবর