অতি ক্ষুদ্র রোবটটি দেখতে ঠিক মাছের মতো। ক্যানসার প্রতিরোধে এবার এই রোবট মাছকেই কাজে লাগাতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। কেমোথেরাপির সঙ্গে এই বস্তুটিকে সরাসরি টিউমারে পাঠানো হবে। কেমোথেরাপিতে শরীরে যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, এই পদ্ধতিতে তা থেকে মুক্তি পাবেন রোগীরা।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতি ক্ষুদ্র রোবট মাছগুলো আয়তনে এক মিলিমিটারের ১০০ ভাগের এক ভাগের সমান। বিশেষ থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে একটি জেল থেকে এগুলো সৃষ্টি করেছেন এক দল চীনা বিজ্ঞানী। ভিন্ন পিএইচ মাত্রায় গেলে এরা আকৃতি পরিবর্তন করে।
আবিষ্কারের পর রোবট মাছটিগুলোকে আয়রন অক্সাইড সল্যুশনে চুবিয়ে রেখে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, এগুলোর মধ্যে চৌম্বক শক্তির সৃষ্টি হয়েছে। কেমো চিকিৎসায় এই চৌম্বক শক্তিকেই কাজে লাগানো হবে।
ক্যানসার চিকিৎসায় এই মাছগুলোকে প্রথমে রক্তনালীতে ইনজেকশনের মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হবে। পরে চৌম্বক শক্তি এদের নিয়ে যাবে টিউমারের কাছে।
ক্যানসার কোষগুলো টিউমারের চারপাশের রক্তরসে থাকা পিএইচ লেভেলকে আরও অম্লীয় করে তোলে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই কেমোর ওষুধ নিয়ে সেখানে হাজির হবে রোবট মাছ। পরে ভিন্ন পিএইচ মাত্রার সংস্পর্শে যাওয়ায় এগুলোর আকৃতির পরিবর্তন ঘটবে। এক পর্যায়ে এরা সঙ্গে নিয়ে যাওয়া কেমোর ওষুধ মুখ হা করে ছেড়ে দেবে।
প্রাথমিকভাবে মাছগুলোর এমন আচরণ কাচের পাত্রে পরীক্ষা করে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসায় ব্যবহারের আগে এগুলোর আকৃতি আরও ছোট করার চিন্তা করা হচ্ছে।
বর্তমানে ক্যানসার চিকিৎসায় কেমোর ওষুধ রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে ক্যানসার কোষের সঙ্গে যুদ্ধ করে। এই যুদ্ধে অসংখ্য সুস্থ কোষও মারা যায়। এর প্রভাবে রোগীর শরীরে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। শারীরিক অস্বস্তি ও চুল পড়ে যাওয়া এর অন্যতম।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, রোবট মাছ শুধু ক্যানসার কোষগুলোকেই নিশানা করবে, এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত থাকবেন রোগীরা।