ইন্টারনেটের এই যুগে এখন ই-মেইল, হোয়াটসঅ্যাপের মতো অনেক আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয়। এখন এক ক্লিকেই বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে প্রাপকের কাছে।
ফলে পায়রা দিয়ে বার্তা পাঠানোর কথা শুনলে ব্যাপারটাকে রূপকথার গল্প বলে মনে হয়।
কিন্তু একটা সময় ছিল যখন কোনো দুর্গম প্রান্ত যেখানে ডাকপিয়নরা পৌঁছতে পারতেন না, সেখানে বার্তা পাঠাতে পায়রাই ছিল একমাত্র অবলম্বন। এর জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। বার্তা পাঠানোর জন্য সেনাবাহিনীতেও পায়রাকে একটা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
এই প্রথা তিন হাজার বছর আগে থেকে মিশরীয়রা প্রথম ব্যবহার করেন। পরে ধীরে ধীরে অন্যরাও এই প্রথাকে রপ্ত করে।
কাক, টিয়া, কাকতুয়ার মতো অনেক পাখিই তো আছে যারা সহজে মানুষের আদবকায়দা রপ্ত করতে পারে। কিন্তু তাদের এই কাজে ব্যবহার না করে কেন শুধু পায়রাকেই পত্রবাহক বা বার্তাবাহক হিসেবে ব্যবহার করা হতো?
চলুন, এবার সেই কারণ জেনে নেয়া যাক।
আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পায়রার মধ্যে রাস্তা চেনার একটা অদ্ভুত ক্ষমতা আছে। পায়রাকে যেকোনো জায়গায় ছেড়ে দিয়ে এলে ঠিক রাস্তা চিনে ঘরে ফিরে আসবে।
তা ছাড়া পাখিরা ম্যাগনেটোরিসেপশনের মাধ্যমে বুঝতে পারে তারা পৃথিবীর কোন জায়গায় আছে।
দাবি করা হয়, সূর্যের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে পায়রা নাকি ঘরে ফেরার রাস্তা ঠিক খুঁজে নিতে পারে।
শুধু রাস্তা চেনার ক্ষমতাই নয়, গতির জন্যও পায়রাকে পত্রবাহক হিসেবে কাজে লাগোনোর জন্য বেছে নেওয়া হতো।
ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার বেগে উড়তে পারে পায়রা। এক দিনে হাজার কিলোমিটার পথ উড়ে যেতে পারে।
শুধু তা-ই নয়, ছয় হাজার ফুট উচ্চতাতেও উড়তে পারে পায়রা।
এসব কারণের জন্যই পায়রাকে পত্রবাহক বা বার্তাবাহক হিসেবে বেছে নেওয়া হতো।