বয়স বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে নানা রকম অসুখ-বিসুখ। কমে যায় রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা। ফলে শরীর ক্রমে দুর্বল হতে শুরু করে।
এ সময় মানুষ অতি অল্পতেই যেকোনো অসুখে কাবু হয়ে পড়তে পারেন। একের পর এক অসুখে পড়ার এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
সুষম খাবার গ্রহণে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বৃদ্ধ বয়সে স্বভাবতই মুখের রুচি কমে আসে। তাই সব খাবার সবাই খেতে পারেন না। তবে ভ্যান্টেজ ডটকমের এক প্রতিবেদনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর এমন কিছু খাবারের কথা উল্লেখ রয়েছে।
দই
দই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত কার্যকর। এতে ভিটামিন ডি-এর পাশাপাশি উপকারী ব্যাক্টেরিয়া থাকে, যা নানা রকম অসুখের সঙ্গে যুদ্ধ করে। বেশি কার্যকারিতা পেতে দইয়ের সঙ্গে বিভিন্ন ফলমূল মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন অনেক দই নানাভাবে পরিশোধন করা থাকে। ফলে উপকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলো পাওয়া যায় না।
পালং শাকপালং শাক বিভিন্ন পুষ্টিগুণে বোঝাই থাকে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি এবং ফাইবার। ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ আরও অনেক উপকারী উপাদানও থাকে পালং শাকে।
নিয়মিত পালং শাক খাওয়া চোখের সুস্বাস্থ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বয়স্কজনিত নানা রকম সমস্যাকেও দূরে রাখে পালং শাক।
ব্রোকলি
ডাক্তারি ভাষায় ব্রোকলিকে বলা হয় ইমিউন বুস্টার। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর টোটকা। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইবার থাকে।
এর কার্যকারিতা অনেকটা পালং শাকের মতোই। তবে কাঁচা ব্রোকলি খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
জাম
আকারে ছোট হলেও পুষ্টিগুণের দিক থেকে জামের কোনো জুড়ি নেই। এই ফলটির বিশেষত্ব হলো- এটি হৃদরোগকে দূরে রাখে। সাধারণভাবে খাওয়ার পাশাপাশি দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে বা শরবত বানিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যাবে।
লাল চাল
লাল চাল ভিটামিন, মিনারেল ও নানা রকম শক্তিবর্ধক উপাদানে পরিপূর্ণ। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এটি অত্যন্ত কার্যকর। সুস্থ থাকতে সাধারণ চালের চেয়ে লাল চাল খাওয়া বেশি প্রয়োজন।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে বেটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ ছাড়াও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
এ ছাড়া এতে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যা বয়স্কদের জন্য বিশেষ উপকারী। বয়স্কদের সপ্তাহে অন্তত এক দিন মিষ্টি আলু খাওয়া উচিত।
ডিম
ডিমকে ভিটামিন ও মিনারেলের স্টোর হাউস বলা হয়। এ ছাড়া এটি প্রোটিনে সমৃদ্ধ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে।
মসলা
হলুদ আর আদার মতো মসলা বয়স্কদের রোগ সংক্রমণ ও অসুস্থতা থেকে রক্ষা করে। এটি শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে সচল করতেও সহায়তা করে।
প্রাণিজ প্রোটিন
চর্বিহীন মুরগি, গরুর মাংস, স্যামন ও সয়া সস স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং কার্ডিওভাসকুলারের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে পূর্ণ স্যামন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
পানি
শরীরকে সুস্থ রাখতে জোয়ান-বৃদ্ধ সবার জন্যই পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার বিকল্প নেই। তবে একজন বয়স্ক ব্যক্তির দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। এতে সাধারণ জ্বর-সর্দি থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।