উপরের ছবিতে যে জার্মান শেফার্ড কুকুরটি দেখছেন, তার নাম গানথার সিক্স। সে কী কারণে বিখ্যাত, জানেন? পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী কুকুর সে।
৫০০ মিলিয়ন ডলার বা ৪ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা মূল্যের একটি ট্রাস্টের মালিক গানথার। সম্প্রতি সে তার সম্পদের মধ্য থেকে একটি বাংলো বিক্রি করতে যাচ্ছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৯ রুমের বিলাসবহুল বাংলোটির প্রাথমিক মূল্য ধরা হয়েছে ৩১ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার।
বাড়িটি আরও আগে থেকেই আলোচনায় ছিল। কারণ কুকুরটির আগে এই বাংলোটির মালিক ছিলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ম্যাডোনা।
আলোচিত এই বাংলোটি ম্যাডোনা ২০০০ সালে গানথার্স ট্রাস্টের কাছে বিক্রি করেছিলেন ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে। গানথার সিক্স তার মালিকের বাবা গানথার ফোরের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে ৫০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের এই ট্রাস্টের মালিকানা পায়।
টাইমস নাও ডটকমের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কুকুরটি যে পরিবারে বেড়ে উঠেছে, সেটির পূর্বপুরুষ গানথার; কারলোটা লিবেনস্টাইন নামের এক জার্মান কাউন্টেসের (জমিদার) কাছ থেকে ১৯৯২ সালে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রায় ৫৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ট্রাস্টের মালিকানা পায়।
গানথারের মৃত্যুর পর এই পরিবারে বেড়ে ওঠা কুকুর গানথার সিক্স সেগুলোর মালিক বনে যায়। বর্তমানে সে টেকারদের তত্ত্বাবধানে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে।
যে বাড়িটির কথা বলা হচ্ছে, সেটি ১৯২৮ সালে তৈরি করা হয়। এটি বিস্কাইন উপসাগরের সামনে অবস্থিত। সহজভাবে বলতে গেলে মিয়ামি বিচের অল্প কটি সুন্দর বাড়ির মধ্যে এটি একটি। বর্তমানে এই বাড়িটি দ্য অ্যাসোলাইন টিমের (সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়সংক্রান্ত সংস্থা) রুথি এবং ইথান অ্যাসোলিনের মাধ্যমে বিক্রির জন্য তালিকাভুক্ত হয়ে আছে।
ফোর্বস ম্যাগাজিনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রুথি বলেন, ‘এত বড় একটি সম্পত্তির মালিক এক কুকুর! কথাটি শোনার পর প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি। আমরা অনেক মাল্টি-মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ি বিক্রি করেছি।
‘কিন্তু এ রকম হলো এই প্রথম। যখন সম্পত্তিটির কেয়ারটেকার আমাকে বললেন, একটি কুকুর এর মালিক, আমরা খুবই অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু সম্পত্তিটির ইতিহাস ঘেঁটে দেখেছি, আইনত কুকুরটি ব্যতীত অন্য কেউ এর মালিকানা দাবি করতে পারবে না।’
রুথি আরও জানান, ‘বাড়িটি খুবই সুন্দর। চারপাশের বড় বড় পামগাছ এর সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া সামনের দিকে রয়েছে চোখ ঝলসানো সৌন্দর্যের নীল সমুদ্র। গানথার সিক্সের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের সময় সে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করে। আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখনই আমি বাড়িটি বিক্রি করতে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই।’
গানথার দিনের বেশির ভাগ সময় কাটায় তার বাড়ির সামনের সুইমিংপুলের পাশে বসে থেকে। তার নিজস্ব বেডরুম হলো ম্যাডোনা আগে যে মাস্টার বেডরুমে ঘুমাতেন সেটি।
গানথারের এক তত্ত্বাবধায়ক কার্লা রিচিতেল্লি এপিকে বলেন, ‘সে (কুকুর) গানথার ট্রাস্টি বোর্ডের একজন অন্যতম সদস্য। এই ট্রাস্টের কোন সম্পত্তি কখন বিক্রি করা হবে, কখন কী কেনা হবে, এ ব্যাপারে ট্রাস্টি বোর্ডের সবার মতামত সমান গুরুত্বপূর্ণ। জার্মান শেফার্ড এই কুকুরটি ট্রাস্টের বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে সেসব মিটিংয়ে যোগ দেয়। নিজের প্রাইভেট জেটে করে বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করে। তার খাবার তৈরি করার জন্য আলাদা শেফ নিয়োগ করা আছে।’