মানুষের ভাবনা প্রকাশের অন্যতম ভালো মাধ্যম ভাষা। ভাষা এমন এক সেতু যার মধ্য দিয়ে মানুষ তার চিন্তা, অনুভূতি, ধারণা, অভিজ্ঞতা একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করতে পারে।
শান্তিকামী একদল মানুষ বিশ্বাস করে, একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ বা কথা বলার মধ্য দিয়ে যে কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাই মানুষে মানুষে যোগাযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন থেকে এসেছে ‘বিশ্ব হ্যালো দিবস’।
যাকে খুব অপছন্দ তাকেও ‘হ্যালো’ সম্ভাষণ জানিয়ে কাছে টানার সুযোগ নিতে পারেন আজ। মাত্র ১০ জন মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে উদযাপন করতে পারেন ৪৯তম হ্যালো দিবস।
যেভাবে এল দিনটি
১৯৭০ সাল। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আতঙ্ক, অজানা আশঙ্কা। মুখোমুখি অবস্থানে ইসরায়েল ও মিশর। মিশরের সমর্থনে আছে সিরিয়াও। যুদ্ধপরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে পুরো জনপদ।
তখনও কিছু মানুষ বলছিলেন, যুদ্ধ নয়, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে এই বিরোধের নিষ্পত্তি করুন। তাহলে প্রাণহানি যেমন থামানো যাবে, বিশ্বের সীমিত সম্পদের ক্ষতিও ঠেকানো যাবে।
তিন বছর ধরে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে, ১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবর শুরু হয় অক্টোবর বা ইয়োম কিপপুর যুদ্ধ। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলা ওই যুদ্ধে হাজার হাজার সেনা ও বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারান। অনেক সেনা সদস্যরা যেমন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অনেককে দেয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
যুদ্ধ বেঁধে গেলেও আলোচনার মধ্য দিয়ে যে বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব, তার ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন অ্যারিজোনা স্টেস ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক ব্রায়ান ম্যাককরমেক এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজেুয়েট মাইকেল ম্যাককরমেক। আর সেই বিশ্বাসটি মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়োজন অনুভব করলেন তারা।
যুদ্ধের সেই ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়ে ১৯৭৩ সালের ২১ নভেম্বর প্রথম হ্যালো দিবস উদযাপন করেন দুই ম্যাককরমেক। এখন বিশ্বের প্রায় ১৮০টি দেশে এই দিনটির উদযাপন করা হয়।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই দিনটির সম্ভাবনা অনুধাবন করতে পেরেছেন ৩১ নোবেল জয়ী। তাই দিনটি উদযাপনের পাশাপাশি যারা বিশ্ব শান্তিতে অবদান রাখতে চান, তাদের সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।