ভয় একটি স্বাভাবিক ও মনস্তাত্বিক প্রক্রিয়া। জীবনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে ভয় পেতে পারেন। ভয়কে প্রশ্রয় না দিয়ে তাকে মোকাবিলা করা বুদ্ধিমানের কাজ। এনএইচএস ইনফর্ম ম্যাগাজিনের একটা প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভয়কে কীভাবে জয় করা যায়। সেগুলো দেখে নেয়া যাক।
সময় নিন
সাধারণত কোনো কারণে তীব্র ভয় পাওয়ার পর মানুষ পরিষ্কারভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাই ভয় পাওয়ার পর প্রথম কাজই হলো- নিজেকে সময় দেয়া। এতে মস্তিষ্কের উত্তেজিত স্নায়ুগুলো শান্ত হবে। এর জন্য কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি, চা-কফি খাওয়া কিংবা গোসল করা যেতে পারে। এতে ভয়ের উৎস থেকে মনযোগ অন্যদিকে চলে যাবে। ফলে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে পারবেন।
লম্বা নিঃশ্বাস নিন
যদি ভয় পাওয়ার পর আপনার হৃদযন্ত্র দ্রুত কাজ করে বা ঘাম হতে থাকে। তা থেকে মুক্তির জন্য দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিন। সেজন্য পেটের উপর হাত রাখুন, আর ধীরে ধীরে গভীর নিঃশ্বাস নিন। এতে ভয়ের মাত্রা হালকা হয়ে যাবে। এবার মুখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড়ুন।
ভয়ের মুখোমুখি
ভয় থেকে যতই পালানোর চেষ্টা করবেন, ভয় ততই ভয়াবহ হয়ে উঠবে। যদি আপনি ভয়ের মুখোমুখি দাঁড়াতে শুরু করেন, তখন এর সঙ্গে সহজেই বোঝাপড়া করতে পারবেন। ধরা যাক- আপনি নৌকায় উঠতে ভয় পান, এই ভয় থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনার উচিত নৌকা ভ্রমণে যাওয়া এবং এর সঙ্গে নিজেকে অভ্যস্ত করা।
সবচেয়ে খারাপ পরিনামটি ভাবুন
যা নিয়ে ভয় পেয়েছেন, ভাবুন এই ভয়ের ফলে বর্তমানের চাইতে আরও বড় কোন ক্ষতিটি হতে পারত। ধরুন, এই ভয়ের কারণে আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে পারত। কিন্তু সেটা তো হয়নি। এর মানে এই ভয়ের এতটুকুই ক্ষমতা, যতটুকু আপনি বর্তমানে অনুভব করছেন। এতে ভয়টি আর ভয়ের জায়গায় থাকবে না, সাধারণ একটি ঘটনা হয়ে ওঠবে।
চ্যালেঞ্জ নিন
যা নিয়ে ভয় পেয়েছেন তাকে চ্যালেঞ্জ জানান। উদাহরণস্বরূপ- মনে করুন আপনি লিফটের ভেতর আটকা পড়ে গেছেন এবং আপনার দম বন্ধ হয়ে আসছে। চিন্তা করুন অন্যকারও সঙ্গে এমন হলে এই ভয় থেকে মুক্ত হতে তাদেরকে আপনি কোন পরামর্শ দিতেন। এবার সেগুলো ভেবে নিজেকে সংযত রাখুন।
কোনোকিছুই পারফেক্ট নয়
জীবনে নানা ধরনের ভয় থাকবে। কোনোকিছুই শতভাগ নিরাপদ নয়। এটি মেনে নিতে শিখুন। যেসব কাজে খারাপ ফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেগুলো নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করবেন না। নিজেকে বোঝাবেন যে, খারাপ হতেই পারে। এই ভাবনার ফলে জীবন থেকে অন্তত অর্ধেক ভয় গায়েব হয়ে যাবে।
সুচিন্তা
ভয় পাওয়ামাত্র উত্তেজিত না হয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। চোখ বন্ধ করে জীবনে ঘটা কোনো সুখ বা আনন্দের সময়ের কথা ভাবতে পারেন। যেখানে আপনি নিরাপদ ও সুখে আছেন। হতে পারে সেটি শৈশবের কোনো স্মৃতি।
কথা বলুন
কোনোকিছু নিয়ে ভয় পেলে তা নিজের ভেতর চেপে রাখবেন না। আপনজনদের সঙ্গে সে ব্যাপারে কথা বলুন। তারা যেন বুঝতে পারে আপনি ভয় পাচ্ছেন এবং আপনার সাহায্য প্রয়োজন।