প্রতিদিন ঘুম ভেঙে অফিসে ছোটা যার রুটিন, তার আর সময় কই থলে হাতে নিয়মিত বাজারে যাওয়ার। ব্যস্ত এই জীবনে এই সমস্যার একমাত্র সমাধান রেফ্রিজারেটর। প্রতিদিন বাজার করার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়েছে এই যন্ত্রটি।
তবে প্রযুক্তির সুবিধা জীবনকে গতি দিলেও যোগ করছে কিছু সমস্যাও। রেফ্রিজারেটরকে দুর্গন্ধমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখার কাজটি বেশ ক্লান্তির, তাই অনেকেই দিনের পর দিন হাত দেন না এর ভেতরে।
নিত্যদিনের জীবনযাত্রায় অতি দরকারি রেফ্রিজারেটর অবশ্য পরিষ্কার আপনাকে করতেই হবে, নয়তো জীবাণুর দখলে যাবে সংরক্ষিত খাদ্যসামগ্রী।
রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার রাখার প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দিতে বছরের একটি দিনও ঠিক করা হয়েছে। সেটি আজ ১৫ নভেম্বর। দিনটিকে ক্যালেন্ডারের পাতায় টুকে রাখা হয়েছে ‘ক্লিন আউট ইওর রেফ্রিজারেটর ডে’ বা রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার করার দিন হিসেবে।
রেফ্রিজারেটর তৈরির কৌশলটি মানুষের আয়ত্তে আসে ১৭৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে। তারপর নানা গবেষণা, প্রযুক্তিকে আরও এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছেই। ১৯১১ সালের দিকে এসে পশ্চিমা বিশ্বের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়ার মতো ফ্রিজ আবিষ্কারে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা। এর পরের ১১ বছরকে বলা যায় ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটরের বিপ্লবের সময়। ওই সময়ে রেফ্রিজারেটর শিল্পে এত বেশি প্রযুক্তিগত উন্নতি আসে, যার সঙ্গে তুলনা চলে আজকের এই আধুনিক সময়ের স্মার্টফোনের নিয়ত পরিবর্তনশীল উন্নত প্রযুক্তির।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সাধারণ রেফ্রিজারেটরের পাশাপাশি আলাদা ফ্রিজ বক্স তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব শুরু হয়। তবে ফ্রিজ আর রেফ্রিজারেটরকে একত্রিত করে একটি কম্বো ডিজাইন তৈরিতে মানুষকে অপেক্ষা করতে হয় আরও প্রায় তিন দশক। ’৭০ ও ’৮০-এর দশকে এসে সেটা সম্ভব হয়, অর্থাৎ আজকের দিনে এসে আমরা যেমন ফ্রিজ দেখছি।
ঘরে ব্যবহার্য ইলেকট্রনিকস পণ্য তৈরির অন্যতম প্রতিষ্ঠান ওয়ার্লপুল ফ্রিজ পরিষ্কার করার দিনটির প্রবক্তা। ১৯৯৯ সাল থেকে তারা এই দিনটি উদযাপন করতে মানুষকে উৎসাহিত করছে। এমনকি তারা আমেরিকানদের জন্য একটি টোল ফ্রি নম্বরও চালু করেছে, যাতে ফ্রিজ পরিষ্কারের টিপস বিনা পয়সায় পেতে পারেন যে কেউ।
সবশেষ একটা টোটকা। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলছে, আপনার ফ্রিজটিকে ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার নিচের তাপমাত্রায় রাখুন। এটিকে আদর্শ তাপমাত্রা জানিয়ে এফডিএ বলছে, তাহলে ফ্রিজে সংরক্ষিত খাদ্য নিরাপদ ও শীতল থাকবে।