বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুরুষও আক্রান্ত হন স্তন ক্যানসারে

  •    
  • ৯ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:০৫

স্তন ক্যানসার নিয়ে নারীর তুলনায় পুরুষের সংকোচ অনেক বেশি। অনেকে এটি স্বীকারই করতে চান না। ফলে তাদের ডায়াগনোসিস করানোর ক্ষেত্রে বেশ জটিলতার মুখোমুখি হন চিকিৎসকেরা। সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে পুরুষেরা স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলোকে উপেক্ষা করেন, ফলে অনেক সময়েই রোগটি ধরা পড়ে অনেক দেরিতে।

সাধারণের মাঝে প্রচলিত ধারণা হলো, স্তন ক্যানসারে একমাত্র নারীরাই আক্রান্ত হন। তবে এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। প্রাণঘাতী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন পুরুষও।

সংখ্যার দিক থেকে নারীর তুলনায় পুরুষের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অবশ্য বেশ কম। তবে সব মিলিয়ে সংখ্যাটি একেবারে নগণ্যও নয়। ভারতের হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত মোট রোগীর ১-২ শতাংশ পুরুষ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্তন ক্যানসার নিয়ে নারীর তুলনায় পুরুষের সংকোচ অনেক বেশি। অনেকে এটি স্বীকারই করতে চান না। ফলে তাদের ডায়াগনোসিস করানোর ক্ষেত্রে বেশ জটিলতার মুখোমুখি হন চিকিৎসকেরা। সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে পুরুষেরা স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলোকে উপেক্ষা করেন, ফলে অনেক সময়েই রোগটি ধরা পড়ে অনেক দেরিতে। অত্যন্ত জটিল অবস্থায় পৌঁছে যাওয়ায় নারীর তুলনায় স্তন ক্যানসার আক্রান্ত পুরুষের মৃত্যুঝুঁকি তাই বেশি।

মুম্বাইয়ের ওকহার্ট হসপিটালের কনসালট্যান্ট ব্রেস্ট অ্যান্ড লেপারেস্কোপিক সার্জন ডা. অদিতি আগারওয়াল এ বিষয়ে বলেন, ‘ক্লিনেফেল্টার সিনড্রমে ভোগা পুরুষদের (যারা একটি বাড়তি এক্স ক্রোমোসম নিয়ে জন্মান) স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ তাদের দেহে অ্যাস্ট্রোজেনের পরিমাণ বেশি থাকে এবং তারা গাইনিকোমাস্টিয়ায় ভোগেন। এতে করে পুরুষের স্তন টিস্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।’

স্তন ক্যানসারের শুরুটা হয় বুকের দুগ্ধনালি ও দুধ তৈরিকারী গ্ল্যান্ড সমৃদ্ধ লবিউলে। বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত স্তনবৃন্ত ও অ্যারিওলার নিচে পুরুষ ও নারী স্তনের টিস্যুর কয়েকটি নালি থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে নারী দেহে অ্যাস্ট্রোজেনের মতো হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে নালির সংখ্যা বাড়ে ও লবিউল তৈরি হয়। ডা. আগারওয়ালের মতে, পুরুষের মধ্যে এই হরমোনগুলোর নিম্নমাত্রার কারণে, নালি ও লবিউল কম তৈরি হয় এবং চর্বিযুক্ত টিস্যু থাকে।

নারীর ক্ষেত্রে ১২ বছর বয়সের আগে পিরিয়ড শুরু হওয়া ও ৫৫ বছর বয়সের পর মেনোপজ হওয়া, বেশি বয়সে প্রথম সন্তান জন্ম দেয়া বা কখনও সন্তানহীনতা স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডক্টর আগারওয়াল বলেন, পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই স্তন ক্যানসারের সাধারণ কারণ হচ্ছে বয়স ও জিনগত বৈশিষ্ট্য। তার মতে, অন্যান্য সাধারণ কারণ- যেমন ধূমপান, রেডিয়েশন থেরাপি, অ্যালকোহল ও ব্যায়ামের অভাবকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষণ

নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলো হচ্ছে স্তনে গুটলি বা চাকা, এক বা দুটি স্তন ফুলে যাওয়া, নরম বা ব্যথা অনুভব করা, স্তন থেকে তরল নিঃসরণ হওয়া, স্তনবৃন্তের চারদিকে চুলকানো, স্তনবৃন্ত উলটে যাওয়া বা ভেতরে ঢুকে যাওয়া, স্তনের চামড়া মোটা হয়ে যাওয়া ও ব্যথা করা।

ডা. আগারওয়াল বলেন, ‘পুরুষের ক্ষেত্রে স্তন ছোট থাকে বলে ক্যানসারেরও প্রাথমিক লক্ষণ ছোট হয়, কিন্তু তা আশপাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’

নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই ম্যামোগ্রাম ও বায়োপসি করে কোনো সন্দেহজনক গুটি বা চাকা ক্যানসারপ্রবণ কি না, তা নির্ণয় করা সম্ভব।

স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা সম্পর্কে ডা. আগারওয়াল বলেন, ‘ক্যানসারের ধরন, পর্যায় ও জায়গা নিশ্চিত করার পর চিকিৎসক আপনার চিকিৎসা নির্ধারণ করবেন। আপনাকে মাস্টেকটোমি বা লাম্পেকটোমি করার পরামর্শ দেয়া হতে পারে।’

পুরুষের ক্ষেত্রে এ ধরনের রোগ এড়াতে জীবনযাত্রায় বদল আনার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। প্রতিদিন ব্যায়াম করা, ওজন না বাড়ানো ও সবুজ শাকসবজি, ফল, বাদাম, ডাল ও সিরিয়ালযুক্ত সুষম খাবার খাওয়া উচিত। ১৮ বছর বয়স থেকেই নিয়মিত নিজের স্তন পরীক্ষারও পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিভাগের আরো খবর