বেক্সিমকো ফার্মার করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিভাইরাল ওরাল পিল বা মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘এমোরিভির’ দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
ওষুধটির জেনেরিক সংস্করণের নাম ‘মলনুপিরাভির’।
ফার্মার চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা মঙ্গলবার দুপুরে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ওরাল পিলের প্রতিটির বাজারমূল্য ৭০ টাকা। সোমবার রাত থেকে এটি ঢাকার বিভিন্ন ওষুধের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার ওষুধটি অন্য বিভাগীয় শহরে পাঠানো হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শে ১৮ বছরের বেশি বয়সী করোনা আক্রান্ত রোগীকে সংক্রমণ প্রতিরোধে ৪০টি পিল খেতে হবে। প্রতিটি ৭০ টাকা ধরে এরা বাজারমূল্য হবে ২ হাজার ৮০০ টাকা।
রাব্বুর রেজা বলেন, করোনা আক্রান্ত একজন ব্যক্তি সুস্থ করতে ২ হাজার ৮০০ টাকার ওষুধ লাগবে।
দেশের কোথায় কোথায় এ ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে বেক্সিমকো ফার্মার সিওও বলেন, ‘গত রাতে আমরা রাজধানীর ১৫০টি ফার্মেসিতে দিয়েছি। আজ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগে পাঠানো হবে।
‘তবে করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান দেখে ওষুধ পাঠানো হবে। যেসব এলাকার মানুষ এখন বেশি করোনাতে আক্রান্ত হচ্ছে, সেই সব এলাকায় এই ওষুধ পাঠানো হচ্ছে।’
আর আগে বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, ‘মহামারির শুরুতে আমাদের প্রথম জেনেরিক রেমডিসিভির উৎপাদনের পর এবার করোনার চিকিৎসায় বিশ্বের প্রথম ওরাল অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ মলনুপিরাভিরের সংস্করণ চালু করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের চিকিৎসা সহজলভ্য করতে বেক্সিমকো ফার্মার দ্রুত সাড়া দেওয়ার সামর্থ্যের আরেকটি উদাহরণ এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমাদের কোম্পানির জন্য একটি বড় অর্জন। আমরা বিশ্বাস করি, মহামারি মোকাবিলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে যেখানে ভ্যাকসিনের সরবরাহ সীমিত।’
দেশে জরুরি প্রয়োজনে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী খাওয়ার ওষুধ মলনুপিরাভির ব্যবহার এবং উৎপাদনের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওষুধ প্রস্তুতকারী বিভিন্ন কোম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন মঙ্গলবার সকালে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধী খাওয়ার ওষুধ মলনুপিরাভির দেশে উৎপাদন ও ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। স্কয়ার, বেক্সিমকো, রেনেটা, ইনসেপ্টা, এসকেএফ, জেনারেল, বিকনসহ ৮ থেকে ১০টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। তবে শুধু বেক্সিমকোকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
‘অনুমোদন প্রক্রিয়ায় আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি দেশেই উৎপাদন করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে এটি এখন দেশে জরুরি ব্যবহার করা যাবে। ওষুধটি পাঁচ দিন আগে যুক্তরাজ্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। এই ওষুধ সেবন করলে করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি থাকার প্রয়োজন কমবে; মৃত্যুও কমবে।’
কোভিড নাইনটিন অ্যান্টিভাইরাল পিলজাতীয় ওষুধটি যৌথভাবে উদ্ভাবন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মার্ক অ্যান্ড কোম্পানি ও রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিকস। জরুরি প্রয়োজনে এ ওষুধ ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছে।
ওষুধটি মহামারি মোকাবিলায় চলমান লড়াই আরও জোরদারে ‘গেমচেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।