কার্তিক শেষ হতে চলল। ভোরের দিকে হিমভাব ঘিরে ধরছে ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরকেও। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে বিছানা ছাড়ার তাগিদ না থাকলেও রোববার আবার সেই ব্যস্ততা।
রাস্তায় বাস চলাচল না থাকায় এ সপ্তাহের রোববারের সকালটি ছিল আরও খানিকটা ঝঞ্ঝাটের। তবে পশ্চিমা বিশ্বে আজ আক্ষরিক অর্থেই সেই বাংলা প্রবাদের মতো ‘খই ভাজার দিন’। মানে এই দিনে কোনো কাজ নেই, তাই নিরিবিলি ভাজা যেতে পারে খই!
নভেম্বরের প্রথম রোববার পশ্চিমারা বেছে নিয়েছে দেহ, মন পরিপূর্ণ স্বস্তি ও প্রশান্তি দেয়ার জন্য। বিশেষ এই দিনটির নাম তাই ‘জিরো টাস্কিং ডে’ বা ‘কাজ না করার দিন’।
মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে এমন সবকিছুই দূরে সরিয়ে রাখার ইচ্ছে থেকে এমন একটি দিনের প্রবর্তন করা হয় যুক্তরাষ্ট্রে। অনেকে দাবি করেন, এমন অবসর কর্মস্পৃহা যেমন বাড়ায়, তেমনি সামনের কাজগুলো গুছিয়ে করার জন্য নিজেকে প্রস্তুতও করা যায়।
সূর্যের আলোকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে ‘ডেলাইট সেভিংস’ ধারণার জন্ম। ঘড়ি ধরে যারা কাজ করেন, গ্রীষ্মে তাদের আরেকটু সক্রিয় করার তাগিদ থেকেই এক ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয় ঘড়ির কাঁটা। যাতে দিনের বেলা সূর্যের আলোর বাড়তি সুবিধা নিয়ে এক ঘণ্টা বেশি কাজ করা যায়।
তবে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে সূর্যের আলোর স্থায়িত্ব। তবে অভ্যাসে অভ্যস্ত মানুষ আগের মতোই ভাবতে থাকে জমে থাকা কাজ শেষ করতে হাতে আছে আরও একটি ঘণ্টা। এই অভ্যস্ততা ভেঙে দিতেই নভেম্বরে আসে ‘জিরো টাস্কিং ডে’। মনে করা হয়, ওই ৬০ মিনিট কাজে ব্যস্ত না থেকে নিজেকে সময় দিলে জীবন আরও আনন্দময় হবে।
লেখক ও ব্লগার ন্যান্সি ক্রিস্টিকে এই দিনটির পথিকৃৎ আখ্যা দিয়েছে ন্যাশনাল টুডে ডটকম। মানসিকভাবে সুস্থ থাকা আর জীবনকে উপভোগ করার পক্ষে এই লেখকের অবস্থান। তিনি মনে করেন, মানসিক অবসাদ বা চাপে থাকা মানুষের সঠিকভাবে নিজের কাজ করা সম্ভব নয়।
ন্যাশনাল টুডে ডটকম বলছে, এই একটি দিন অন্তত আরাম করে ঘুমানো যেতে পারে। এতে দূর হবে দিনের পর দিন অপর্যাপ্ত ঘুমের ক্লান্তি।
জিরো টাস্কিং ডে উপভোগের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, কোনো কিছু নিয়েই না ভাবা। বরং আপনার মন এবং শরীরকে শেখাতে পারেন কীভাবে বিশ্রাম নিতে হয়, কীভাবে বিরতি নিয়ে একটু স্বস্তিতে থাকা যায়।