আগামী পর্যটন মৌসুম থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে অবাধে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
তাহিরপুর উপজেলার শহীদ সিরাজ লেকে (নীলাদ্রি লেক) শনিবার দুপুরে হাওর পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান ডিসি জাহাঙ্গীর হোসেন।
ডিসি বলেন, ‘একসময় মিঠাপানির টাঙ্গুয়ার হাওরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো। তবে এখন মাছ পাওয়া যায় না, কারণ হাওরে অবাধে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলে। তাই আগামী পর্যটন মৌসুম থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা বন্ধ করা হবে।
‘আমরা পর্যটকদের একটি নির্দিষ্ট জায়গা দেখিয়ে দেব। তারা লগি-বৈঠার নৌকা নিয়ে হাওরে ঘুরতে যাবেন। এটি কার্যকর হলে হাওরবাসীদের জীবনমান উন্নত হবে। তাদের কর্মসংস্থানও বাড়বে।’
উদ্বোধন শেষে ডিসি হাওর এলাকার প্লাস্টিক ও ময়লা আবর্জনা পরিচ্ছন্ন করেন এবং বিভিন্ন নৌকায় সচেতনতামূলক বিলবোর্ড টানান।
ডিসি জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সুনামগঞ্জ হাওর বেষ্টিত একটি জেলা। টাঙ্গুয়ার হাওরকে কেন্দ্র করে বিগত সময়ে অনেক পর্যটক এসেছেন।
‘তবে সবচেয়ে দুঃখের বিষয় তাদের মধ্যে কেউ কেউ হাওরে প্লাস্টিকের বোতল, খাবারের প্লেট, ময়লা-আবর্জনা ফেলে যান, যার কারণে এখানে পরিবেশদূষণ হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে হাওরের জীববৈচিত্র্য। আমরা এগুলো আর মেনে নেব না। নৌকার মাঝি থেকে শুরু করে সব পর্যটকদের সর্তক করে দিতে চাই আমরা।’
জেলা প্রশাসক জানান, তাদের এ অভিযান চলতে থাকবে। এছাড়া হাওরের মাঝিদের তালিকা করে নিবন্ধনের আওতায় এনে মাঝিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
এছাড়া এখন থেকে সব নৌকায় একটি করে ডাস্টবিন থাকা বাধ্যতামূলক করা হবে। যারা এ নির্দেশনা মানবেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ডিসি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান কবির, তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক অমল কর, হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা, ইউপি চেয়ারম্যান খসরুল আলমসহ অনেকে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার হাওর ও তার আশপাশের হাওর এলাকার পরিবেশদূষণ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরই পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।