ছয় দিনের ব্যবধানে কুয়াকাটা সৈকতে আবারও ভেসে এসেছে ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি মৃত ডলফিন।
এ নিয়ে চলতি বছরে কুয়াকাটা সৈকতে মোট ২৩টি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে।
সৈকতের ঝাউবাগান এলাকায় বুধবার ভোর ৫টার দিকে ডলফিনটি বালুর উপরে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটিকে খবর দেয়।
ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্য কে এম বাচ্চু জানান, বুধবার ভোরে ভাড়ায় চালিত এক মোটরসাইকেলের চালক তাকে ফোন দিয়ে মৃত ডলফিনটির ব্যপারে প্রথমে খবর দেয়।
সেখানে গিয়ে তিনি ডলফিনটির ভিডিও করেন ও ছবি তোলেন। পরে সেটি মাটি চাপা দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য ডলফিনের মতো এটিরও মাথায় ও লেজে আঘাতের চিহ্ন আছে। ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের আঘাতে এটির মৃত্যু হয়েছে।
আনুমানিক তিন থেকে চারদিন আগে ডলফিনটির মৃত্যু হতে পারে। মারা যাবার পর এটি জোয়ারের পানিতে ভেসে সৈকতে এসে বালুর উপর আটকে পড়েছে।
ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্য আবুল হোসেন রাজু জানান, এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সৈকতের তেত্রিশকানি এলাকায় একটি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছিল। সেটির শরীরেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ নিয়ে এ বছর মোট ২৩টি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে।
পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বার বার কেনো মৃত ডলফিন ভেসে আসছে আর কেনো মারা যাচ্ছে সেটি উদ্বেগের বিষয়। বিষয়টি নিয়ে গত আগস্ট মাসে জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত চার মাসে কুয়াকাটা সৈকতে মোট ১৯টি ডলফিন মৃত অবস্থায় ভেসে এসেছে। এর মধ্যে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পাওয়া গেছে ১২টি ডলফিন।
ডলফিন নিয়ে কাজ করা ইকোফিশ-২ প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ সাগরিকা স্মৃতির মতে, সাগরে যারা মাছ শিকার করে তারেদকে সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি ডলফিন কেনো মারা যাচ্ছে সেটি নিয়েও গবেষণা করা দরকার।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, ডলফিন মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত নয়। বিষাক্ত মাছ খেয়ে ডলফিন মারা যেতে পারে।
আবার সাগরে কিছু বিষাক্ত শ্যাওলা আছে যেগুলো শামুক ঝিনুক খায়। আবার সেই শামুক ঝিনুক খেয়েও ডলফিন মারা যেতে পারে।
তিনি আরও জানান, মৃত ডলফিনগুলোকে স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গে মাটি চাপা দিয়ে রাখে। এগুলো সংরক্ষণ করা গেলে গবেষণার জন্য সুবিধা হতো।