নীলফামারীর ২০০ বছরের পুরোনো ‘বাঘমারা’ বটগাছ যেন ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বটগাছটি কে লাগিয়েছিলেন তার সম্পর্কে কোনো সঠিক তথ্য নেই।
তবে স্থানীয় লোকজন জানান, ৫০ বছর আগে এই এলাকার একটি বাড়িতে বাঘ ঢুকেছিল। এ সময় বাঘটি পিটিয়ে হত্যা করে ওই বটগাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর থেকেই বটগাছটি ‘বাঘমারা’ নামে পরিচিতি পায়।
গাছটি লাগানোর বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সুমতিবালা বলেন, ‘আমার শ্বশুরের দাদা গাছটি লাগিয়েছিল বলে পারিবারিক সূত্রে জেনেছি। এখন এটির বয়স আনুমানিক ২০০ বছর। প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেখে আসছে এই গাছটি।’
জেলার তিন উপজেলার সংযোগস্থলে বটগাছটির অবস্থান। গাছটির একদিক দিয়ে সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন, অন্যদিকে জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়ন এবং আরেকদিকে ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নে চলাচল করা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিশাল আকৃতির গাছটির ডালপালা দিন দিন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রচণ্ড গরমে যারা এই পথে চলাচল করেন তারা একটু হলেও বটগাছের নিচে জিরিয়ে নেন।
হরিণচড়া ইউনিয়নের শেওটগাড়ি গ্রামের শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ জানান, এটি অনেক পুরোনো বটগাছ। গাছটি ঘিরেই চলাচলের এই পথ তৈরি হয়েছে। এটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে।
সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমনী কান্ত বলেন, ‘বটপাকুরের বিয়েও হয়েছে অনেক আগে। এই বটগাছটির সঠিক বয়স কেউ বলতে না পারলেও সবার ধারণা ২০০ বছরের কম নয়। এখানে মানুষ আড্ডা দেন, বসে থাকেন, সময় কাটিয়ে আনন্দ পান।’
নীলফামারী সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অহিদুল ইসলাম জানান, এসব বটগাছ ৫০০ বছরেরও বেশি সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকার রেকর্ড আছে। এগুলোকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ‘এত বড় বটগাছ এখন আর চোখে পড়ে না। স্থানীয় লোকজন ভালোভাবে গাছটির রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে।’