শরীরচর্চার অংশ হিসেবে প্রচলিত মত হলো, দিনে ১০ হাজার স্টেপ বা পদক্ষেপ স্বাস্থ্যের জন্য আদর্শ। এমন ভাবনার পেছনে কিছু তথ্য-প্রমাণও আছে।
তবে এক গবেষণায় দেখা গেছে, মৃত্যুঝুঁকি কমাতে হাঁটার গুরুত্ব থাকলেও, দিনে সেটি ১০ হাজার স্টেপ হতে হবে, এমন কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। প্রতিদিন সাত হাজার পদক্ষেপই দেহের সুস্থতা নিশ্চিত করতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ম্যাসাচুসেটসের শারীরিক কর্মক্ষমতা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ অ্যামান্ডা পালুচ ও তার দল দেশটির বিভিন্ন শহরে দুই হাজার মধ্যবয়সী নারী-পুরুষের ওপর গবেষণাটি চালান।গ্রুপের সদস্যদের গড় বয়স ৪৫ বছরের কিছুটা বেশি। প্রতিদিনের হাঁটাচলার নিঁখুত পরিমাপ নিতে তাদের পরানো হয় অ্যাক্সেলেরোমিটার। ২০০৫ সালে গবেষণাটি শুরু হওয়ার পর নিয়মিত বিরতিতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ৭২ জন। হাঁটা (বা না হাঁটা) কীভাবে মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে সেটি বের করার চেষ্টা করেছেন গবেষকেরা। এতে দেখা গেছে, যারা দিনে অন্তত সাত হাজার পদক্ষেপ হেঁটেছেন তাদের অল্প বয়সে মৃত্যু ঝুঁকি, যারা সাত হাজার পদক্ষেপ হাঁটেননি তাদের চেয়ে ৫০ থেকে ৭০ ভাগ কম।গবেষণায় আরও দেখা গেছে, মৃত্যুর হার বাড়া-কমার সঙ্গে কত জোরে হাঁটা হয়েছে তার কোনো সম্পর্ক নেই।গবেষকদের মতে, দৈনিক হাঁটাচলার পরিমাণ বৃদ্ধি মৃত্যুহারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দিতে পারে। তবে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার পর বাড়তি পদক্ষেপ বিশেষ কোনো সুবিধা দেয় না। গবেষক দলটি বলছে, প্রতিদিন ১০ হাজার পদক্ষেপের বেশি হাঁটার সঙ্গে মৃত্যুঝুঁকি কমিয়ে দেয়ার কোনো যোগাযোগ নেই।
হেলথডে নিউজকে পালুচ বলেন, ‘প্রতিদিনের পদক্ষেপ একটি সাধারণ ও সহজ পদ্ধতি। আর প্রতিদিন বেশি হাঁটা সুস্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। যারা প্রতিদিন ১০ হাজার পদক্ষেপ হাঁটতে পারেন না তারা সাত হাজার পদক্ষেপ নিতে পারেন।’
তবে গবেষকেরা একই সঙ্গে মনে করছেন সাত হাজার পদক্ষেপ কোনো জাদুকরী সংখ্যা নয়; অবস্থা ভেদে সংখ্যাটি বদলাতে পারে। বস্টন ইউনিভার্সিটির শারীরিক কর্মক্ষমতা সংক্রান্ত গবেষক নিকোল স্পার্টানোর বলেন, ‘প্রতিদিন হাঁটা কীভাবে স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে সে সম্পর্কে অদূর ভবিষ্যতে আমরা আরও জানতে পারব। এটা সম্ভব হয়েছে আধুনিক অ্যাক্সেলেরোমিটার প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে। এই প্রযুক্তি ২০০৫ সালে ছিল না।’