বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাঁতারে দক্ষ যে উট বিলুপ্তির পথে

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:৪৪

খারাই প্রজাতির উট সমুদ্র ও মরুভূমি দুই ধরনের পরিবেশে দারুণভাবে বসবাস করতে পারে। অন্য উট সাধারণত পুকুর বা ছোট জলাশয়েই টিকতে পারে না, সাগর তো পরের ব্যাপার।

বিরল প্রজাতির ভারতীয় সাঁতারু উট ‘খারাই’ হুমকির মুখে পড়েছে। এই উঠের দেখা পাওয়া যায় ভারতের গুজরাট প্রদেশে। প্রদেশটির কোচ জেলায় মূলত লবণাক্ত জলাভূমিতে এই উট দেখা যায়।

অধিক পরিমাণে লবণ উৎপাদন শুরু করায় বিপন্ন হতে চলেছে খারাই উঠগুলো। কোচ জেলার অধিকাংশই সমুদ্রবেষ্টিত।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের লবণ কোম্পানিগুলো জোয়ারের পানি আটকে দিচ্ছে। ফলে ধীরে ধীরে ম্যানগ্রোভ অঞ্চল শুকিয়ে যাচ্ছে। এটি উটের জীবন এবং তাদের ভবিষ্যৎকেও বিপন্ন করে তুলছে।

খারাই প্রজাতির উট সমুদ্র ও মরুভূমি দুই ধরনের পরিবেশে দারুণভাবে বসবাস করতে পারে। অন্য উট সাধারণত পুকুর বা ছোট জলাশয়েই টিকতে পারে না, সাগর তো পরের ব্যাপার।

বিশেষ এ কাজটির জন্য খারাই উটের শারীরিক গঠন বিন্যাসও কিছুটা ভিন্ন। সাধারণ উটের তুলনায় খারাইদের শরীর ছোট হয়। কিন্তু এদের মুখের আকৃতি সাধারণ উটের চেয়ে বড় হয়। কান বড় ও ভেতরের দিকে ঢুকানো হয়। তাছাড়া পা হয় খুব লম্বা।

ফলে খারাই যে পানিতে শুধু সাঁতার কাটতে পারে তা নয়, পানির গভীরতা অনুযায়ী এরা পানির নিচে কখনও সাঁতার কাটে, কখনও হাঁটে। মোট কথা, পানির নিচেও তারা ততটাই সাবলীল, যতটা তারা মরুভূমির ওপরে।

সমুদ্রের ৩-৪ কিলোমিটার দূরের দ্বীপে খাবারের জন্য যায় খারাই উটগুলো। ছবি: সংগৃহীত

খারাই প্রজাতির উটেরা সাগর পাড়ি দিয়ে কাছের কোনো দ্বীপে চলে যায়, যেখানে প্রাকৃতিকভাবেই একটা ম্যানগ্রোভ বন থাকে। ম্যানগ্রোভ বনের গাছ তাদের মূল খাবার। লবণ জল বা ক্ষারের মধ্যে বসবাস করার কারণে এই উটকে ‘খারাই উট’ নাম দেয়া হয়েছে।

ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে চারণভূমি হওয়ায় তিন কিলোমিটার পথ সাঁতার কেটে যায় উটগুলো। এতে অবশ্য অনেক সময় ব্যয় হয়।

লবণ কোম্পানিগুলো অধিক উৎপাদনের জন্য প্যান তৈরি করতে জোয়ারের পানি আটকে দিচ্ছে। যার কারণে ম্যানগ্রোভ অঞ্চল শুকিয়ে যাচ্ছে।

বিবিসি জানায়, এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেও লবণ উত্তোলনকারীরা কিছুই বলেননি।

হামির বাচু নামে এক উট পালনকারী বলেন, ‘আগে উটগুলো ম্যানগ্রোভে নিতে দুই থেকে তিন কিলোমিটার পথ হাঁটতে হতো। আর এখন উটের পালকে খাওয়ানোর জন্য প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার হাঁটতে হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘লবণ প্রস্তুতকারীদের জায়গার একটা সীমানা থাকা উচিত। সেই সীমানার বাইরে উটের চারণক্ষেত্র দখল করা উচিত নয়।’

লবণের জন্য যে প্যান তৈরি করা হয়, সেখানে পড়ে গিয়ে উট মারা যায়। এ ছাড়া শিল্পায়ন এলাকায় বৈদ্যুতিক কাজের জায়গাগুলোতে শর্ট সার্কিটেও অনেক উঠের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন মালিকরা।

ভারত সরকার জানিয়েছে, খারাই উটের বাসস্থান ও উটের মালিকদের জীবিকা রক্ষার জন্য কাজ করছে তারা।

স্থানীয়রা চান, ম্যানগ্রোভকে সুরক্ষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হোক, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিরল প্রজাতির খারাই উট দেখতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর