বিশ্বজুড়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম শনিবার পালন করা হয় ‘বিশ্ব দাড়ি দিবস’। শ্মশ্রুমণ্ডিতদের জন্য উৎসর্গ করা এই দিনটিতে কে কী করেন, সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে দাড়ি থাকা ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ এ তারিখটিতে কী করা যেতে পেরে, সেটি নিয়ে নানা পরামর্শ ও উপদেশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।এর মধ্যে ‘ওয়ার্ল্ডবেয়ার্ডডে ডটকম’ এর পরামর্শ, সারা দিন কোনো কাজ করা যাবে না। কাজ করলেও গাড়ির টায়ার পাল্টানো, বার-বি-কিউ করা বা বাড়ির অন্য দাড়িবিহীন সদস্যদের দিয়ে কাজ করানো জাতীয় কিছু করা যেতে পারে।সাইটটির মতে, যেটা একেবারেই করা যাবে না, তা হলো শেভ করা। দাড়ির দিনে দাড়ি কামানো মোটামুটি অপরাধের মধ্যেই পড়ে।ঠিক কবে দাড়ি দিবসের প্রচলন, সেটা জানা না গেলেও ড্যানিশ ভাইকিংদের পুরাণে খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দে এমন একটা দিনের উল্লেখ পাওয়া যায়। বছরে অসংখ্যবার দাড়ি দিবস পালন করত ভাইকিংরা। ওই দিনে আশেপাশের গ্রামে দলবেঁধে আক্রমণ চালিয়ে তছনছ করে দেয়াটাও অবাক করার মতো কিছু ছিল না।
দাড়ি দিবসে বেশ কিছু মজার রীতি এখনও প্রচলিত বিশ্বের বেশ কয়েকটি জায়গায়।যেমন, স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলের মফস্বলে দাড়িওয়ালা ব্যক্তির সঙ্গে প্রতীকী বক্সিং ম্যাচে অংশ নেন দাড়ি ওঠেনি এমন কোনো বালক। দাড়িওয়ালার হাতে সবসময় থাকে একটি ধারালো বর্শা। ফলে প্রতিবারই তিনি জিতে যান।আবার সুইডেনের ডনস্কবর্গ গ্রামে দাড়ি যাদের নেই, তাদের ২৪ ঘণ্টার জন্য পাশের জঙ্গলে নির্বাসনে পাঠানো হয়। আর ওই দিনটিতে গ্রামের দাড়িওয়ালারা তাদের দাড়িহীন বন্ধু-বান্ধবের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।বিখ্যাতদের মধ্যে লিও টলস্টয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও চে গুয়েভারার দাঁড়ি সুপরিচিত। গুয়েভারা তো তার দাড়ির জন্য বিশ্বের অন্যতম আবেদনময় পুরুষের অসংখ্য তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন।দাড়ি নিয়ে বাঙালির রসবোধের অনেক নিদর্শনের মধ্যে অন্যতম সুকুমার রায়ের ছড়া ‘দাঁড়ের কবিতা’।
এর কয়েকটি লাইন নিচে তুলে ধরা হলো।
‘এক ছিলো দাঁড়ি মাঝি--দাড়ি তার মস্ত,
দাড়ি দিয়ে দাঁড়ি তার দাঁড়ে খালি ঘষ্ত।
সেই দাঁড়ে একদিন দাঁড়কাক দাঁড়াল,
কাঁকড়ার দাঁড়া দিয়ে দাঁড়ি তাকে তাড়াল।
কাক বলে রেগেমেগে “বাড়াবাড়ি ঐ ত!
না দাঁড়াই দাঁড়ে তবু দাঁড়কাক হই ত?
ভারি তোর দাঁড়িগিরি, শোন্ বলি তবে রে--
দাঁড় বিনা তুই ব্যাটা দাঁড়ি হস্ কবে রে?”শেষ করা যেতে যেতে পারে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত কমেডি ‘মাচ আডু অ্যাবাউট নাথিং’ এর একটি সংলাপ দিয়ে।
সেখানে নাটকের অন্যতম চরিত্র বিয়াট্রিস বলেন, ‘যার দাঁড়ি আছে সে যুবকের থেকে কিছুটা বেশি। যার নেই সে ব্যক্তির চেয়ে কিছুটা কম। যে যুবকের চেয়ে কিছুটা বেশি সে আমার জন্যে নয়। আর যে ব্যক্তির চেয়ে কিছুটা কম আমি তার জন্যে নই।’