বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রহস্যময় ব্ল্যাকহোল

  •    
  • ১৬ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:৫০

এখন তোমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে- ব্ল্যাকহোলের জন্ম হয় কিভাবে? এই প্রশ্নের সবচেয়ে পরিচিত ও সাধারণ উত্তর হলো তারা বা নক্ষত্রের মৃত্যু। মানে তারার মৃত্যুর মাধ্যমে ব্ল্যাকহোলের জন্ম হয়।

ব্ল্যাকহোল! কত্ত কঠিন নাম তাই না? বাংলায় যার অর্থ কৃষ্ণগহ্বর। নামের মতোই রহস্যময় এই ব্ল্যাকহোল। তোমরা কি জানো ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর কাকে বলে? বিজ্ঞানের এই কঠিন কঠিন বিষয় নাও জানতে পারো।

ধরে নাও ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর মহাকাশের একটি বিন্দু। যেটি অনেক ঘন এবং এর আছে গভীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি। তা এতটাই শক্তিশালী যে, আলোও সেখান থেকে বের হতে পারে না। মানে ব্ল্যাকহোলের অঞ্চলে প্রবেশ করলে সেখান থেকে কোনো কিছুই আর বের হয়ে আসতে পারে না।

মহাকাশে চার ধরনের ব্ল্যাকহোল রয়েছে। এগুলো হলো স্টেলার, ইন্টারমিডিয়েট, সুপারম্যাসিভ ও মিনিচার ব্ল্যাকহোল।

এখন তোমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ব্ল্যাকহোলের জন্ম হয় কিভাবে? এই প্রশ্নের সবচেয়ে পরিচিত ও সাধারণ উত্তর হলো তারা বা নক্ষত্রের মৃত্যু। মানে তারার মৃত্যুর মাধ্যমে ব্ল্যাকহোলের জন্ম হয়। একটি তারা জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে ফুলে ওঠে, ভর হারায়। মৃত তারাগুলো সুপার-ঘন নিউট্রন বা তথাকথিত স্টেলার ব্ল্যাকহোলে পরিণত হয়, যা সূর্যের চেয়ে কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ গুণ বড় হয়।

চূড়ান্ত পর্যায়ে বিশাল তারাগুলো সুপারনোভা বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে যায়। এই ধরনের বিস্ফোরিত তারাটি মহাকাশের বাইরে ও স্টেলার কেন্দ্রের পেছনে চলে যায়। তারাটি জীবিত থাকাকালীন নিউক্লিয়ার ফিউশন বাহ্যিক ধাক্কা তৈরি করে, যা তারার নিজস্ব ভর থেকে মাধ্যাকর্ষণের অভ্যন্তরীণ টানের ভারসাম্য বজায় রাখে। একটি তারার অবশিষ্টাংশ সুপারনোভার সেই মাধ্যাকর্ষণ মোকাবিলার আর কোনো শক্তি থাকে না। তাই তারার কেন্দ্রটি নিজেই ভেঙে পড়তে শুরু করে। আর যদি এর ভর একটি অসীম ছোট বিন্দুতে পতিত হয়, তাহলে ব্ল্যাকহোলের জন্ম হয়। এই নক্ষত্র-ভরের হাজার হাজার ব্ল্যাকহোল আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে।

একটি ব্ল্যাকহোল অন্যটির মতো নয়

আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা সেই সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলগুলো বিলিয়ন সূর্যের সমান হতে পারে। এই মহাজাগতিক দানবগুলোর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছায়াপথের কেন্দ্রে থাকে। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে একটি বিশাল ব্ল্যাকহোল আছে, যা আমাদের সূর্যের চেয়ে চার মিলিয়ন গুণেরও বেশি বড়। ওর নাম স্যাজিটারিয়াস এ স্টার।

ব্ল্যাকহোল পরিবারের ক্ষুদ্রতম সদস্যরা এখন পর্যন্ত তাত্ত্বিক। প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্ব গঠিত হওয়ার পরপরই অন্ধকারের এই ছোট ঘূর্ণিগুলো আবর্তিত হয়েছিল এবং তারপর দ্রুত বাষ্পীভূত হয়েছিল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আরও মনে করেন, ইন্টারমিডিয়েট-মাস নামক একশ্রেণির বস্তু মহাবিশ্বে বিদ্যমান। যদিও এর প্রমাণ এখনও পর্যন্ত বিতর্কিত।

তাদের শুরুর আকার যাই হোক না কেন, ব্ল্যাকহোলগুলো সারাজীবন ধরে বাড়তে পারে। আসলে এই ব্ল্যাকহোলগুলো মহাকাশের এমন একটি জায়গা, যেখানে কোনো কিছু ঢুকলে আর কখনোই ফিরে আসবে না। এমনকি এই ব্ল্যাকহোল নামক জায়গা থেকে আলোকরশ্মিও কখনো ফিরে আসবে না। এটা সবকিছুকে নিজের দিকে টানে। এর মধ্যে আছে অত্যন্ত বেশি ভরবিশিষ্ট কিছু বস্তু, যেগুলোর ভরের কারণে অত্যন্ত তীব্র মহাকর্ষীয় শক্তি উৎপন্ন হয়।

অন্ধকারে উঁকি

যেহেতু ব্ল্যাকহোলগুলো সব আলো গিলে ফেলে। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আকাশের অনেক চকচকে মহাজাগতিক বস্তুর মতো তাদের সরাসরি চিহ্নিত করতে পারেন না। তবে কয়েকটি বিষয় আছে, যা একটি ব্ল্যাকহোলের উপস্থিতি প্রকাশ করে।

যেমন- একটি ব্ল্যাকহোলের তীব্র মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আশপাশের যেকোনো বস্তুকে নিজের দিকে টান দেয়। এতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কাছাকাছি লুকিয়ে থাকা অদৃশ্য এ দৈত্যের উপস্থিতি অনুমান করতে এই অনিয়মিত গতিবিধি ব্যবহার করে। অথবা বস্তুগুলো একটি ব্ল্যাকহোলকে প্রদক্ষিণ করতে পারে। এতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এমন নক্ষত্রগুলোর সন্ধান করতে পারেন, যেগুলো সম্ভাব্য ব্ল্যাকহোল চিহ্নিত করতে কিছুই প্রদক্ষিণ করে না। এভাবেই ২০০০ দশকের শুরুর দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ‘স্যাজিটারিয়াস এ স্টারকে ব্ল্যাকহোল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।

সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

এ বিভাগের আরো খবর