একদিন এক পণ্ডিত বিজয়নগরের রাজ্যে এলেন। তিনি রাজামশাইয়ের কাছে দাবি করলেন যে তিনি এতটাই জ্ঞানী ব্যক্তি যে উপস্থিত সভাসদদের কেউই তর্কে তাকে হারাতে পারবে না।
মহারাজ সেই চ্যালেঞ্জটিকে গ্রহণ করলেন এবং মন্ত্রীদের আদেশ দিলেন সেই পণ্ডিতের সঙ্গে তর্কযুদ্ধে অংশ নিতে।
তর্কযুদ্ধ শুরু হলো। দেখা গেল একের পর এক মন্ত্রী সেই পণ্ডিতের কাছে হেরে যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছিল, বিভিন্ন বিষয়ে পণ্ডিত মশাইয়ের প্রচুর জ্ঞান আছে।
অবশেষে এলো তেনালি রামনের পালা। তেনালি পণ্ডিত মশাইকে একটি বইয়ের আকারে ভাঁজ করা কাপড় দেখিয়ে বললেন, আমি আপনার সঙ্গে এই বিখ্যাত ‘তিলাকাষ্ঠ মহিশ বন্ধনম’ বইটির ওপর তর্কাতর্কি করব।
বইয়ের নাম শুনে পণ্ডিতমশাই ঘাবড়ে গেলেন। কারণ তিনি এই নামে কোনো বইয়ের কথা শোনেননি।
তখন পণ্ডিত রাজামশাইয়ের কাছে এক রাতের সময় চেয়ে নিলেন প্রস্তুত হওয়ার জন্য। কিন্তু পণ্ডিত মশাইয়ের মনে ভয়, তিনি সেই তর্কাতর্কিতে হেরে যেতে পারেন। কারণ তিনি আগে কখনও সেই বইটির নাম শোনেননি। উপায় না দেখে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে লুকিয়ে সেই রাজ্য থেকে চম্পট দিলেন।
পরদিন সকালে রাজামশাই এবং তার সভাসদরা শুনলেন যে পণ্ডিত পালিয়ে গেছেন রাতের অন্ধকারে।
রাজামশাই তেনালির ওপর অত্যন্ত খুশি হলেন এবং বললেন যে তিনি সেই বইটি পড়তে চান, যেটির নাম শুনে পণ্ডিতমশাই ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
তেনালি হেসে বললেন, ওই নামে কোনো বই ছিলই না।
তখন সে সেই কাপড়ের তৈরি মলাট খুলে ফেললেন এবং রাজামশাইকে বললেন যে, তিনি তিল কাঠি এবং কিছু ভেড়ার গোবর একসঙ্গে মিশিয়ে মোষ বাঁধার দড়ি দিয়ে বেঁধে সেটিকেই একটি বই এর মতন দেখতে জিনিস বানিয়ে ছিলেন।
তেনালি যে যে জিনিসগুলো দিয়ে সেটি বানানো হয়েছিল, সেগুলোর সংস্কৃত শব্দগুলোকে মিশিয়ে বইটির নামটি তৈরি করেছিলেন ‘তিলাকাষ্ঠ মহিশ বন্ধনম’।
মহারাজ তেনালির চালাকি ও উপস্থিত বুদ্ধিতে খুশি হলেন এবং তাকে পুরস্কৃত করলেন।