বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বীরবলের গল্প

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২২ জুন, ২০২২ ১১:৪৭

ভীষণ বিপদে পড়ল তিন মন্ত্রী। পরিবার-পরিজন রেখে কোথায় যাবে? তাদের দুরবস্থা দেখে বীরবল বললেন, ‘আপাতত আপনাদের কোনো উপায় নেই। তবে আপনারা আমার কথা শুনলে শেষতক রেহাই পেতে পারেন।’

ভারতের উত্তর প্রদেশে ১৫২৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন বীরবল। মূল নাম মহেশ দাস হলেও বীরবল নামেই তিনি পরিচিত। মোগল সম্রাট আকবরের দরবারে অন্যতম সভাসদ ছিলেন। চতুরতার জন্যই বীরবল মূলত সবার কাছে সুপরিচিত। ১৫৫৬-১৫৬২ সালের দিকে কবি ও গায়ক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে পরবর্তী সময়ে সম্রাটের অত্যন্ত কাছের মানুষে পরিণত হন এবং নানা সেনা অভিযানে অংশ নেন। মজার মজার কাণ্ড ঘটানোর জন্য তিনি বিখ্যাত। চলো তার কয়েকটি ঘটনা শুনি।

-

কাকের সংখ্যা

একদিন আকবর ও বীরবল বসে গল্প করছিলেন। হঠাৎ আকবর প্রশ্ন করলেন, ‘দিল্লি শহরে কত কাক আছে বলতে পার বীরবল?’ অদ্ভুত প্রশ্নটি শুনে বীরবল বললেন, ‘জাঁহাপনা, বর্তমান শহরে ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯টি কাক আছে। আপনার যদি সন্দেহ হয় তাহলে নিজে অথবা অন্য লোক দিয়ে গুনে দেখতে পারেন। যদি দেখেন, এই সংখ্যা থেকে কিছু কম কাক আছে তাহলে বুঝবেন দিল্লির আশপাশে বন্ধুদের সঙ্গে তারা বেড়াতে গেছে। আবার যদি দেখেন ওই সংখ্যা থেকে বেশি কাক আছে, তাহলে বুঝবেন তাদের বন্ধুরা বা আত্মীয়রা অন্য এলাকা থেকে বেড়াতে এসেছে!’

বীরবলের উত্তর শুনে আকবর নির্বাক হয়ে রইলেন। তিনি আর বীরবলকে কাকের সংখ্যা সম্পর্কে কোনো উচ্চবাচ্যই করলেন না।

-

সীমাহীন রাজ্য

সম্রাট আকবর একবার কোনো কারণে তার তিন মন্ত্রীর ওপর ভায়ানক ক্ষেপে গেলেন। আদেশ করলেন, ‘তোমরা অবিলম্বে আমার রাজ্য ছেড়ে চলে যাবে। যদি আর কোনো দিন তোমাদের দেখি, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে।’ মন্ত্রীত্রয় অনেক কাকুতি-মিনতি করল শাস্তি মওকুফের জন্য। কিন্তু সম্রাট অনড়।

ভীষণ বিপদে পড়ল তিন মন্ত্রী। পরিবার-পরিজন রেখে কোথায় যাবে? তাদের দুরবস্থা দেখে বীরবল বললেন, ‘আপাতত আপনাদের কোনো উপায় নেই। তবে আপনারা আমার কথা শুনলে শেষতক রেহাই পেতে পারেন।’

তারা সানন্দে রাজি হয়ে গেল। বীরবল তাদের কিছুদিনের জন্য দিল্লীর আশপাশে লুকিয়ে থাকতে বললেন। আর কয়েক মাস পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিলেন।

প্রায় বছরখানেক পর একরাতে মন্ত্রী তিনজন লুকিয়ে বীরবলের কাছে এলো। বীরবল কিছু বুদ্ধি শিখিয়ে তাদের বিদায় করলেন।

পরদিন সম্রাট আর বীরবল বাগানে হেঁটে বেড়াচ্ছেন। এমন সময় সম্রাট দেখলেন, একটি গাছের ডালে তিনজন লোক হাত শূন্যে মেলে বসে আছে। এগিয়ে গিয়ে দেখলেন এরা আর কেউ নয়, নির্বাসিত সেই তিন মন্ত্রী। তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের নিচে নেমে আসার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, ‘তোমাদের এত বড় সাহস, আমার আদেশ অমান্য করেছ! এ মুহূর্তে তোমাদের প্রাণদণ্ড দেয়া হবে।’

মন্ত্রী তিনজন হাঁটু গেড়ে সম্রাটের সামনে বসে পড়ে বলল, ‘জাঁহাপনা, আমরা আপনার আদেশ অমান্য করিনি। আপনি নির্দেশ দেয়ার পরপরই আমরা বেরিয়ে পড়ি। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম সব দিকেই গিয়েছি। অনেক শহর বন্দর পার হয়েছি। তবু আপনার রাজ্যসীমা অতিক্রম করতে পারিনি। আমাদের মনে হয়েছে মহামান্য সম্রাটের রাজ্য সীমাহীন। তাই ঠিক করেছি আকাশে উড়াল দেব। গাছে উঠে শূন্যে হাত বাড়িয়ে আমরা সে চেষ্টাই করছিলাম।’

সম্রাট বুঝতে পারলেন এটা আসলে বীরবলের বুদ্ধি। তিনি মন্ত্রী তিনজনকে ক্ষমা করে দিলেন। আর বীরবলকে করলেন পুরস্কৃত।

এ বিভাগের আরো খবর