মাংস খেতে গিয়ে এক বাঘের গলায় হাড় ফুটল। গলায় ভীষণ যন্ত্রণা নিয়ে কী করবে বুঝতে পারল না। হঠাৎ তার মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল। সে নিজের স্মার্টফোনটি হাতে নিয়ে গলায় হাড় ফুটলে কী করতে হয় তা লিখে ইন্টারনেটে সার্চ দিল।
সে দেখতে পেল, একটি ওয়েবসাইটে লেখা আছে সারস পাখিকে ডেকে তার লম্বা ঠোঁট গলার ভেতর ঢুকিয়ে হাড় বের করে আনা যায়।
বুদ্ধিটা খুব মনে ধরল বাঘের। সে দ্রুত সমস্যার কথা লিখে সারসের কাছে মেইল পাঠাল।
না গেলে বাঘ রেগে খেয়ে ফেলতে পারে বলে সারসও ভয়ে ভয়ে বাঘের বাড়িতে চলে এলো।
বাঘ বলল, সারস, আমার গলা থেকে হাড় বের করে দাও। বিনিময়ে আমার এই নতুন মডেলের আইফোনটি পাবে। কয়েক দিন আগেই আমার বড় ভাই জাপান থেকে এটি পাঠিয়েছে।
নতুন মডেলের আইফোনের কথা শুনেই সারসের চোখ চকচক করে উঠল। তার অনেক দিনের শখ একটা আইফোন কিনবে। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারছে না। এখন এই সুযোগে আইফোনটা বাগিয়ে নিতে পারলে মন্দ হয় না।
কিন্তু বাঘের গলায় নিজের গলা ঢুকিয়ে দিতে হবে ভাবতেই সারসের মনে একটু ভয় ঢুকে গেল। সে আমতা আমতা করে বলল, কিন্তু হুজুর আমি তো এ কাজ আগে করিনি।
বাঘ বলল, তুমি করোনি তো কী হয়েছে। তোমার বংশের অন্য কেউ তো করেছে। এই দেখ, আমি তোমাকে ইউটিউবে ভিডিও দেখাচ্ছি। এটা দেখে শিখে নিয়ে আমার গলার হাড় বের করো। নাও তাড়াতাড়ি করো। আর সইতে পারছি না।
সারস বাঘের কথা মতো ইউটিউবে দুইখানা ভিডিও টিওটরিয়াল দেখে নিয়ে বাঘের গলায় নিজের লম্বা গলাটি ঢুকিয়ে দিল।
বাঘ বলল, কি হে কিছু পেলে?
সারসও ভেতর থেকে বলে উঠল, না হুজুর। কিচ্ছু তো দেখতে পাচ্ছি না।
বাঘ বলল, সে কী? ভিডিও টিউটরিয়াল ঠিকঠাক দেখেছিলে তো?
সারস বলল, গলা ঢুকানো সময় পর্যন্ত তো ঠিকমতোই দেখলাম হুজুর। কিন্তু গলার ভেতর গিয়ে কোথায় খুঁজতে হবে তা তো জানি না। ভিডিওতে ক্যামেরা তো গলার ভেতর পর্যন্ত নেয়নি।
বাঘ রেগে গিয়ে বলে উঠল, ফাজিল! ঠিকমতো ভিডিও না দেখেই আইফোনের লোভে আমার গলার ভেতর ঢুকে পড়েছিস? দাঁড়া তোকে এক্ষুনি চিবিয়ে খেয়ে নিচ্ছি।
এই বলে বাঘ সারসের গলায় কামড় বসিয়ে সারসকে খেয়ে ফেলার চেষ্টা করল। কিন্তু তার গলায় যে আগে থেকেই হাড় ফুটে রয়েছে সে কথা বাঘ ভুলেই গিয়েছিল। ফলে কামড় দিতে গিয়ে বাঘ ব্যথা পেল। এই সুযোগে সারস পালিয়ে গেল।