ভাঁড় অর্থ হলো যারা মজার মজার কথা বলে বা মজার ঘটনা ঘটিয়ে মানুষকে আনন্দ দেয়।
গোপাল ভাঁড় ছিলেন তেমনই একজন মানুষ।
১৭১০ সালের দিকে নদীয়া জেলার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাসদ ছিলেন গোপাল ভাঁড়।
রসবোধের জন্যে তার খ্যাতি ছিল। তার উপস্থিত বুদ্ধিও ছিল অনেক।
বুদ্ধির জোরে তিনি অনেক সমস্যার সমাধান করতেন।
আজ থাকছে তেমনই একটি ঘটনা।
ভাইপোর গাই
গোপালের ভাইপো আর তার স্ত্রীর মধ্যে ভীষণ ঝগড়া হচ্ছে দেখে গোপাল তাদের থামাতে গেলেন।
গোপালকে দেখে তার ভাইপো বললেন, ‘দেখুন তো কাকা, আমি আগামী বছর একটা দুধেল গাই কিনব, আর তাই শুনে আমার বউ বলছে, সে নাকি গাইয়ের দুধ দিয়ে পায়েস বানিয়ে তার বাপের বাড়ির গুষ্টিকে খাওয়াবে!’
গোপাল হাত তুলে তাদের থামালেন, ‘আস্তে...’।
ভাইপো থামলেন।
এবার গোপাল ভাঁড় খেঁকিয়ে উঠলেন, ‘বদমাশ, তোর বউয়ের পায়েস তো পরে। বাড়ির পিছে আমি যে শাক-সবজির বাগান করেছি, সেগুলো যে তোর গরু খাবে, সে খেয়াল আছে?’
গ্রামের মোড়ল
গোপাল একবার গ্রামের মোড়ল হয়েছিলেন। তো একদিন ভোরবেলায় এক লোক এসে ডাকতে লাগলেন, ‘গোপাল? গোপাল?’
গোপাল ভাঁড় কোনো উত্তর না দিয়ে শুয়েই রইলেন।
এবার লোকটা চিৎকার করে ডাকতে লাগলেন, ‘মোড়ল সাহেব, মোড়ল সাহেব।’
এবারও গোপাল কোনো কথা না বলে মটকা মেরে শুয়ে রইলেন।
গোপালের বউ ছুটে এসে বললেন, ‘কী ব্যাপার, লোকটা মোড়ল সাহেব মোড়ল সাহেব বলে চেঁচিয়ে পাড়া মাত করছে, তুমি কিছুই বলছ না!’
গোপাল বললেন, ‘আহা, ডাকুক না কিছুক্ষণ। পাড়ার লোকজন জানুক, আমি মোড়ল হয়েছি।’