ভাঁড় অর্থ হলো যারা মজার মজার কথা বলে বা মজার ঘটনা ঘটিয়ে মানুষকে আনন্দ দেয়।
গোপাল ভাঁড় ছিলেন তেমনই একজন মানুষ।
১৭১০ সালের দিকে নদীয়া জেলার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাসদ ছিলেন গোপাল ভাঁড়।
রসবোধের জন্যে তার খ্যাতি ছিল। তার উপস্থিত বুদ্ধিও ছিল অনেক।
বুদ্ধির জোরে তিনি অনেক সমস্যার সমাধান করতেন।
আজ থাকছে তেমনই একটি ঘটনা।
গোপালের চিঠি লেখা
একদিন এক বুড়ি এসে গোপালকে বলল, ‘গোপাল দাদা, আমার একখানা চিঠি লিখে দাও না। আমার ছেলে পুরী থেকে ১০ ক্রোশ দূরে নাগেশ্বরপুর গেছে। কোনো খবর পাচ্ছিনে বেশ কয়েক দিন হলো। টাকা-পয়সাও নাই যে কাউকে পাঠাব।’
বুড়ির কথা শুনে গোপাল বলল, ‘আজ তো আমি চিঠি লিখতে পারব না ঠাকুরমা।’
‘কেন ভাই, আজ কি যে, তুমি চিঠি লিখতে পারবে না? অনেক দিন হয়ে গেছে। আজ না লিখলেই নয়। আর তোমার দেখা সব সময় পাই না যে তোমাকে চিঠি লিখতে বলি। আজ দেখা পেয়েছি। একখানা চিঠি লিখে দাও না।’ বুড়ি বলল।
- আমার যে পায়ে ব্যথা গো ঠাকুরমা।
- পায়ে ব্যথা তাতে কি হয়েছে? চিঠি লিখবে তো হাত দিয়ে! পা দিয়ে কি তুমি চিঠি লিখবে নাকি? তোমার কথা শুনলে হাসি পায়। তোমার মতো এমন কথা কোথাও শুনিনি।
গোপাল হেসে বলল, ‘চিঠি তো লিখব হাত দিয়েই। কিন্তু আমার হাতের লেখা এত জঘন্য যে, সেটা অন্য কেউ পড়তে পারবে না। আমার লেখা চিঠি আমাকে গিয়ে পড়ে দিয়ে আসতে হবে। আমার যে এখন পায়ে ব্যথা। এখান থেকে পুরী আবার পুরী থেকে ১০ ক্রোশ দূরে নাগেশ্বরপুরে চিঠিটা তো আমি পড়ে দিয়ে আসতে পারব না। তুমি অন্য কাউকে দিয়ে চিঠিখানা এবারকার মতো লিখিয়ে নাও, ঠাকুরমা। আমার পা ভালো হলে চিঠি লিখে দেব এবং নিজে গিয়ে পড়ে আসব।’