এলক এক ধরনের হরিণজাতীয় প্রাণী। আমেরিকা ও এশিয়ার বনে এদের পাওয়া যায়।
আজ আমরা আমেরিকার কলোরাডো প্রদেশের একটি এলকের কথা বলব।
তখন এলকের বয়স ২ বছর। ঠিকমতো শিং গজায়নি।
একদিন সে বনের মধ্যে হেঁটে বেড়াচ্ছিল। পাশেই পড়ে ছিল একটি গাড়ির টায়ার।
সেই টায়ারটা নিয়ে খেলতে শুরু করল সে। খেলতে খেলতেই হঠাৎ তার গলায় টায়ারটা আটকে গেল।
ওর তো আর হাত নেই যে গলা থেকে টায়ারটা নামিয়ে ফেলবে।
নানাভাবে সে চেষ্টা করেও সেটা গলা থেকে নামাতে পারল না।
গলার মালার মতো টায়ারটা ওর গলায় ঝুলে রইল।
গলায় টায়ার নিয়ে বনের মধ্যে ঘুরছে হরিণটা।
দিন গেল। মাস গেল। তত দিনে হরিণটার শিংও গেল বড় হয়ে।
ব্যাস! টায়ারটা স্থায়ীভাবে এলকের গলায় আটকে গেল।
এখন গলায় টায়ার নিয়েই সে হাঁটে, টায়ার নিয়েই খায়, ঘুমায়।
এভাবে দুই বছর চলে গেল।
তারপর একদিন বনের পাশের এক বাসিন্দার চোখে পড়ল ব্যাপারটা।
তিনি উদ্ধারকর্মীদের খবর দিলেন। কিন্তু যতক্ষণে উদ্ধারকর্মীরা এলো, ততক্ষণে হরিণটা আবার বনের গভীরে চলে গেছে।
এবারের মতো ব্যর্থ হলেও উদ্ধারকর্মীরা কিন্তু এলকের কথা ভুলে গেলেন না। তারা খোঁজ করতে থাকলেন।
খুঁজতে খুঁজতে ঠিকই আরেক দিন পেয়ে গেলেন হরিণটাকে।
অজ্ঞান করার ইনজেকশন দিয়ে দূর থেকে এলককে ঘুম পারিয়ে দেয়া হলো।
হরিণটাকে অজ্ঞান করা হয়েছে।
তারপর শুরু হলো কাঁচি দিয়ে টায়ার কাটার পালা।
এখানেও দেখা দিলো সমস্যা।
টায়ারের মধ্যে স্টিলের তার থাকে। সেগুলো কাঁচি দিয়ে কাটা যাচ্ছিল না। ওদিকে হরিণটারও চেতনা ফিরে আসার সময় হয়ে যাচ্ছে।
বাধ্য হয়ে তারা শিং কেটে টায়ার বের করে আনলেন।
চলছে টায়ার কাটার চেষ্টা। অবশেষে শিং কেটে উদ্ধার করা হয়েছে টায়ার।
হরিণের শিং আমাদের চুলের মতো। কাটলে ব্যথা লাগে না।
শিং কাটার কিছক্ষণের মধ্যে এলকের চেতনা ফিরে এলো। উঠে দাঁড়াল সে। টলতে টলতে ফিরে গেল বনের মধ্যে।
গলায় টায়ার না থাকায় এলকটা খুশি হয়েছিল কি না জানা যায়নি। তবে উদ্ধারকর্মীরা কিন্তু খুশি।
একটা প্রাণীকে কষ্ট থেকে মুক্তি দিলে খুশি না হয়ে কী পারা যায়।