তেনালি রামকৃষ্ণ ছিলেন মহারাজা কৃষ্ণদেব রায়ের দরবারের একজন কবি এবং পরামর্শদাতা। তাকে আমরা চিনি তার অসাধারণ রসিকতা, কৌতুক-রসবোধ এবং অসামান্য বুদ্ধিমত্তার জন্য। আজ শুনব তার একটি মজার ঘটনা।
সব থেকে বড় বোকার তালিকা
মহারাজা কৃষ্ণদেব রায়ের ঘোড়া পোষার শখ ছিল। তার আস্তাবলে ছিল কয়েকটি সেরা জাতের ঘোড়া।
একদিন দূর দেশ থেকে আসা এক ঘোড়া ব্যাপারী কৃষ্ণদেব রায়ের দরবারে এসে হাজির হলেন।
তিনি বললেন যে, তার কাছে অনেক ভালো জাতের আরবের ঘোড়া আছে। তিনি সেগুলো বিক্রি করতে চান।
তিনি মহারাজাকে আমন্ত্রণ জানালেন তার নিজের ঘোড়াটি দেখার জন্য, যেটিতে চেপে মহারাজার কাছে এসেছেন। যদি তিনি সেটিকে পছন্দ করেন তাহলে তিনি আরও অনেক ঘোড়া তার জন্য নিয়ে আসবেন।
মহারাজের ঘোড়াটা পছন্দ হয়ে গেল। তিনি ব্যাপারীকে বললেন, ‘আমার সব ঘোড়া চাই।’
মহারাজ তাকে ৫ হাজার সোনার মুদ্রা দিলেন অগ্রিম হিসেবে।
ঘোড়ার ব্যাপারী বললেন যে তিনি বাকি ঘোড়া নিয়ে দুই দিনের মধ্যে ফিরে আসবেন।
দুই দিন কেটে গেল। দেখতে দেখতে দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেল। কিন্তু ব্যাপারী ফিরে এলেন না।
মহারাজা চিন্তিত হয়ে পড়লেন।
একদিন বিকেলে মহারাজা বাগানে গিয়ে দেখেন তেনালি কাগজে কিছু একটা লিখছে।
মহারাজা তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী লিখছ তেনালি?’
তেনালি মহারাজার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এই রাজ্যে যত বোকা আছে তাদের তালিকা বানাচ্ছি।’
রাজামশাই তেনালির কাছ থেকে কাগজটি নিয়ে দেখেন যে, বোকার তালিকায় সবার ওপরে তার নাম লেখা রয়েছে।
মহারাজা তেনালির ওপর রেগে গেলেন। বললেন, ব্যাপারটার জবাব দিতে।
তেনালি বললেন, ‘অচেনা ব্যাপারীকে যিনি ৫ হাজার স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে দেন, তিনি অবশ্যই বোকাদের সর্দার।’
মহারাজা জিজ্ঞাসা করলেন, ব্যাপারী যদি ফিরে আসে ঘোড়াগুলোকে নিয়ে, তাহলে?’
তেনালি বললেন, ‘ব্যাপারী যদি ফিরে আসে তাহলে সে হবে আরও বড় বোকা। সে ক্ষেত্রে মহারাজার নাম কেটে ব্যাপারীর নামটি ১ নম্বরে তুলে দেয়া হবে।’
নীতিকথা: অচেনা লোকের ওপর কখনই ভরসা করবে না।