ভাঁড় অর্থ হলো যারা মজার মজার কথা বলে বা মজার ঘটনা ঘটিয়ে মানুষকে আনন্দ দেয়।
গোপাল ভাঁড় ছিলেন তেমনই একজন মানুষ।
১৭১০ সালের দিকে নদীয়া জেলার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাসদ ছিলেন গোপাল ভাঁড়।
রসবোধের জন্যে তার খ্যাতি ছিল। তার উপস্থিত বুদ্ধিও ছিল অনেক।
বুদ্ধির জোরে তিনি অনেক সমস্যার সমাধান করতেন।
আজ থাকছে তেমনই একটি ঘটনা।
চোরকে জব্দ
একদিন গোপালের জ্বর হওয়ায় রাজসভায় যেতে পারেনি। মহারাজ সভাসদদের নিয়ে নানা আলাপ-আলোচনা করতে করতে হঠাৎ বললেন, `আমার সভার মধ্যে এমন কি কেউ আছে, যে গোপালের ঘর থেকে কিছু চুরি করে আনতে পারে? যদি কেউ পারে, তবে সে সামান্য জিনিস হলেও আমি তাকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করব। তোমরা কেউ রাজি থাকলে বলো।'
মহারাজ পুরস্কারের লোভ দেখালেও কেউ রাজি হচ্ছিল না গোপালের ঘরে চুরি করতে। কারণ গোপাল বিরাট চালাক। তার চোখে ধুলো দেয়া সহজ নয়। ধরা পড়লে নাকালের শেষ থাকবে না। নাকানি-চোবানি তো খেতে হবেই, আর গোপাল একদিন না একদিন প্রতিশোধ নেবেই।
সব শেষে ভূপাল নামের এক লোক পুরস্কারের লোভে মাঝরাতে গোপালের বাড়িতে সিঁদ কেটে প্রবেশ করল। গোপাল আগে থেকেই রাজসভার কথা জানতে পেরেছিল, তাই সে লোভি লোকটাকে জব্দ করার জন্য তৈরি হয়ে রইল।
পূর্ব প্রস্তুতি মতো গোবরে পূর্ণ একটা কলসির ওপরে কিছু টাকা রেখে দিয়ে একপাশে লুকিয়ে রইল।
লোকটি সিঁদ কেটে যখন ঘরের মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে দেখল যে, সামনেই একটি টাকাভর্তি কলসি বসানো আছে। সে দেরি না করে কলসিটা মাথায় তুলে মনের আনন্দে রাজবাড়ীর দিকে এগোতে লাগল।
কিছু দূর যেতেই গোপাল ঢিল ছুঁড়ে ব্রাহ্মণের মাথার কলসিটা ভেঙে দিল। কলসি চুরমার হয়ে সঙ্গে সঙ্গে লোকটির সারা শরীর গোবরে মাখামাখি হয়ে গেল।