তেনালি রামকৃষ্ণ ছিলেন মহারাজা কৃষ্ণদেব রায়ের দরবারের একজন কবি এবং পরামর্শদাতা। তাকে আমরা চিনি তার অসাধারণ রসিকতা, কৌতুক-রসবোধ এবং অসামান্য বুদ্ধিমত্তার জন্য। আজ শুনব তার একটি মজার ঘটনা।
সেপাইকে জব্দ
তেনালি রামন মহারাজা কৃষ্ণদেব রায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। দরবারের ঠিক বাইরে সিপাহিরা তাকে আটকালো।
তেনালি রামন বললেন, ‘আমি মহারাজা কৃষ্ণদেব রায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। শুনেছি তিনি দয়ালু এবং মহৎ ব্যক্তি। যেহেতু আমি অনেক দূর থেকে দেখা করতে এসেছি, সেহেতু মহারাজা আমাকে কিছু না কিছু উপহার নিশ্চিত দেবেন।’
শুনে সিপাহিটি বলল, ‘যদি মহারাজ কিছু উপহার দেন তাহলে তোমার লাভ হবে। আমার তো কোনো লাভ হবে না।’
তেনালি বললেন, ‘আমি যাই পাই না কেন, তোমাকে তার অর্ধেক ভাগ দেব ‘
শুনে সিপাহিটি খুশি হয়ে তেনালিকে মহারাজার দরবারে প্রবেশ করতে দিল।
তেনালি রাজার সামনে গিয়ে কুর্নিশ করার বদলে দাঁড়িয়ে রইলেন। এই বেয়াদবি রাজা কৃষ্ণদেব সহ্য করলেন না। তিনি তেনালিকে ৫০ বেতের বারি দেবার জন্য সিপাহিদের আদেশ দিলেন।
এবার তেনালি হাত জোড় করে রাজাকে বললেন, ‘এই উপহারটি আমি এবং দরবারের আরেকজন সেপাই মিলে অর্ধেক-অর্ধেক ভাগ করে নিতে চাই। তিনি আমাকে দরবারে ঢুকতে সাহায্য করেছিলেন।’
ঘটনা শুনে রাজা কৃষ্ণদেব রায় রেগে গেলেন। তিনি সেই সিপাহিকে এনে ২৫ ঘা বেতের বাড়ি দিলেন। বাকিটা দিলেন তেনালিকে।
তবে সেপাইকে জব্দ করার বুদ্ধি দেখে রাজামশাই তেনালির প্রশংসা করলেন। সবশেষে তাকে দামি জামা উপহার দিলেন এবং রাজদরবারে বিদূষক হিসেবে নিয়োগ করলেন।