বনের মধ্যে শিয়াল আর সারস পাখির মধ্যে খুব ভাব। একদিন শিয়াল ভাবল সারসকে দাওয়াত দিয়ে আপ্যায়ন করা যাক।
শেয়াল সারসকে বলল, ‘কাল আমার বাড়িতে এসো বন্ধু। দাওয়াত রইল!’
সারস খুশি হয়ে পরের দিন দাওয়াত খেতে গেল। দুষ্টু শিয়াল করল কি, দুধের পায়েস রান্না করে প্লেটে ঢেলে অতিথিকে খেতে দিল।
বলল, ‘খেয়ে নাও দোস্ত। তোমার জন্য আমি নিজের হাতে রান্না করেছি।’
তোমরা তো জানই, সারস পাখির ঠোঁট লম্বা। সেই লম্বা সুচালো ঠোঁট দিয়ে সারস প্লেটে ঠোকর মারল কিন্তু কিছুই তার ঠোঁটে আটকাল না।
এর মধ্যে চেটেপুটে সব পায়েস নিজেই শেষ করে দিল শিয়াল।
খেয়েদেয়ে বলল, ‘কিছু মনে কোরো না দোস্ত, খেতে দেবার মতো আর কিছু আমার কাছে নেই।’
সারস জবাব দিল, `ঠিক আছে। অনেক খেয়েছি। ধন্যবাদ। এবার তোমাকে দাওয়াত দেবার পালা। কালকে এসো আমার বাড়ি, একসঙ্গে খাওয়া যাবে।’
পরদিন শিয়াল গেল সারসের বাড়ি। সারস মাছ দিয়ে চমৎকার ঝোল রান্না করল। খেতে দিল চিকন মুখওয়ালা লম্বা কলসিতে।
তোমরা তো জান, শিয়ালের মুখ মোটা। সেই মুখ চিকন কলসিতে কিছুতেই ঢুকবে না।
সারস পাখি বলল, ‘খাও দোস্ত। দারুণ সব মাছ আছে কলসির ভেতরে।’
কলসির মধ্যে মুখ ঢোকাতে চেষ্টা করল শিয়াল। এদিক থেকে এগোয়, ওদিক থেকে এগোয়, একবার চাটে, একবার শোঁকে, কিন্তু এক ঢোকও খেতে পারল না। খাবে কী করে, আগেই তো বলেছি কলসির মধ্যে তার বিরাট মাথাটা তো ঢুকছে না।’
লম্বা কলসিতে ঠোঁট ঢুকিয়ে সারস কিন্তু সব খেয়ে শেষ করে দিল। বলল, ‘কিছু মনে কোরো না দোস্ত, তোমাকে দেবার মতো আর কিছু নেই।’
শিয়াল দুঃখে মরে। ভেবেছিল সাত দিনের খাওয়া আজই খেয়ে নেবে, তার বদলে ঘরে ফিরল থোঁতা মুখ ভোঁতা করে।’