বিদ্যুৎ চলে গেছে একটু আগে। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।
ঘরের দেয়াল ধরে ধরে রান্নাঘরে এসেছি।
মোমবাতিগুলো ফ্রিজে রাখা আছে। ফ্রিজটা ধরার চেষ্টা করছি। একবার ধরতে পারলেই বাঁচি।
খুব বেশি দূরে নয় ফ্রিজটা কিন্তু অন্ধকারের কারণে মনে হচ্ছে আমি এক বিল্ডিংয়ে আছি আর ফ্রিজটা আরেক বিল্ডিংয়ে।
আজই প্রথম অন্ধকারে মোমবাতি খুঁজছি। এর আগে মা খুঁজে বের করতেন।
সমস্যা হচ্ছে, আজ নিয়ে চার দিন হলো মা বাসায় নেই। শুধু কি তাই! বাসায় নেই বাবাও।
আসলে বাবাকে নিয়ে মা গেছেন হাসপাতালে। আজ বাবার অপারেশন।
অসুস্থ বাবার পাশে থাকার মতো কেউ নেই মা ছাড়া।
হাসপাতালের পরিবেশ আমার মতো ছোটদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে আমাকে বাসায় রেখে গেছেন তারা।
অন্ধকার আমি পছন্দ করি না। মা বলেছেন ভূত বলে কিছু নেই। কিন্তু তারপরও কেন যেন ভয় লাগে।
হঠাৎ ফ্রিজটা খুঁজে পেলাম। মোমবাতি বের করে জ্বালাতেই মায়ের একটা কথা মনে পড়ে গেল।
মা বলেছিলেন, ‘মেয়েদের হতে হবে সাহসী। আত্মবিশ্বাস হতে হবে ঝোড়ো বাতাসের মতো প্রবল।’
সত্যিই তো, মা একাই বাবাকে সামলাচ্ছেন। সব প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। বুক ভরা সাহস না থাকলে কি তিনি এটা করতে পারতেন? আমিও অবশ্যই মায়ের মতো সাহসী হব।
মোমবাতি নিয়ে বারান্দায় দাঁড়ালাম। তখনই মা ফোন করলেন। বিদ্যুৎ নেই শুনে মা বললেন, ‘ভয় করছে মা?’
আমি বললাম, ‘একটুও না। তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা কোরো না। আমি ভালো আছি। তুমি বাবার যত্ন নাও।’
এখন আমি সত্যি সত্যিই ভয় পাচ্ছি না। মন বলছে, ‘ভয় পেয়ো না। তুমি অবশ্যই তোমার মায়ের মতো আত্মবিশ্বাসী এবং শক্তিশালী হবে।’
চমৎকার এই গল্পটি লিখেছে আমাদের বন্ধু সুবাহ মোস্তাফিজ।
বন্ধুরা, চাইলে তোমরাও গল্প লিখে আমাদের কাছে পাঠাতে পারো। লিখতে পারো ছড়া কিংবা কৌতুক, আঁকতে পারো ছবি। লেখার এবং আঁকার সঙ্গে অবশ্যই তোমার নাম, স্কুলের নাম, কোন ক্লাসে পড় এবং আব্বু বা আম্মুর ফোন নম্বর দেবে।
পাঠানোর ঠিকানা: nbkidzone@gmail.com