একদিন এক কুকুরছানা আমাদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলো।
ছানাটিকে দেখে আমার মায়া হলো।
তাকে বাড়িতে এনে খেতে দিলাম।
যতো দিন যায় ততো তার প্রতি মায়া বাড়তেই থাকে।
সে আমাদের সঙ্গে থেকে যায়।
কয়েক মাস পর আমরা বাসা বদল করলাম।
নতুন বাসায় জিনিসপত্র তোলার সময় সে বাসার দরজার পাশে কাদা-পানিতে পড়ে গেলো।
পড়ে সে চেয়ারের সঙ্গে ঝুলছিলো।
তাকে নতুন বাসায় এনে গোসল করিয়ে দিলাম।
তারপর একটু বড় হলো এবং আমাদের সব কথা বুঝতে পারলো।
আমাদের সঙ্গে থাকে, আবার কখনও কখনও ঘুরে বেড়ায়।
রাতে আমার পাশে ঘুমায়।
তারপর থেকে একটু বাইরে যেতে শিখলো।
আমাদের বাসার উপরেই থাকতো বাড়িওয়ালা।
কুকুরছানাটি দরজা খোলা পেলেই বাড়িওয়ালাদের বাসায় ঢুকে যেতো। আবার চলেও আসতো।
বাড়িওয়ালা কুকুরছানাটিকে পছন্দ করতো না।
বলতো, 'এসব কুকুর-মুকুর বাসায় রাখে কেন?'
আমি কুকুরছানাটিকে বুঝিয়ে বললাম যেন তাদের বাসায় না যায়।
সেও আমার কথা বুঝতে পারলো।
একদিন আমরা সবাই কাজে ব্যস্ত, তার আগে আমি বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলাম।
কুকুর ছানাটি তখন আমার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে মাথা তুলে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
সে হয়তো কিছু বলতে চেয়েছিলো।
কিন্তু আমি বুঝিনি।
আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
হঠাৎ মনে পড়লো তার কথা।
তাড়াহুড়ো করে বারান্দায় গেলাম।
দেখি সে নেই।
তার খোঁজে চটজলদি বাইরে গেলাম।
কিছুক্ষণ খোঁজার পর দেখলাম, একটা গাছের ডালে তাকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
আমি এই দৃশ্য দেখে কথা বলতে পারছিলাম না।
কাঁদতে কাঁদতে ওকে সেখান থেকে নিয়ে এলাম।
বাসার সবাই মিলে ওর জন্য খুব কাঁদলাম।
তারপর বাড়ির পাশে মাঠের কোণে তাকে মাটিচাপা দিলাম।
তার এ করুণ মৃত্যু আমাকে খুব ব্যথিত করেছে, যা কোনোদিন ভুলতে পারবো না।
বলি, তোমরা কেউ কারও পোষা প্রাণীকে এমন কষ্ট দিও না।
সপ্তম শ্রেণী; সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফেনী