বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিপের পাতা লুকিয়ে আছে কার ডানায়?

  • কিডজোন ডেস্ক   
  • ২৬ নভেম্বর, ২০২০ ০৭:৫১

কাঠঠোকরা গাছ ঠোকরায়। তবে গাছের মরা ডালই ঠোকরায় তারা। মরা ডালেই বাসা বানায়। ডাল যখন পড়ি পড়ি করে তখন আরেকটা মরা ডাল বেছে নেয়। একটা ডাল, একটা মা কাঠঠোকরা ও তার ছানার গল্প শুনি চলো...

সোনালি পিঠ কাঠঠোকরা।

আমাদের অতি পরিচিত কাঠঠোকরা।

গ্রাম-শহর যেখানে চাও সেখানেই পাবে এদের।

এরা দেখতে অনেকটা মাছরাঙার মতো।

মাথায় লাল টুপি পরা।

পাখা কালো।

তাতে সাদা সাদা ফোঁটা।

কে যেন টিপের পাতা লুকিয়ে রেখেছে তাদের ডানায়।

এদের পাখা দেখে মানুষ টিপ বানানো এবং ব্যবহার করা শিখেছে কি না কে জানে!

সে যাই হোক।

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কড়ি গাছে বাসা করেছে একটা সোনালি পিঠ কাঠঠোকরা।

মরা ডালে।

বাসা বানাতে তাই তেমন খাটা খাটুনির দরকার হয়নি তার।

ভেতরে যে জায়গায় বসে সে, ঠিক তার উল্টো পাশে করে নিয়েছে ছোট ফুটো।

সেই ফুটো দিয়ে বাসায় আসা-যাওয়া করে বাতাস।

এসির বাতাসকেও হার মানায় যেন!

কয়েকদিন পর ডিম দিয়েছে কাঠঠোকরা।

ফুটফুটে ছানা বেরিয়েছে।

পুঁচকে ছানার ঢং দেখে মা কাঠঠোকরার সে কী খুশি!

বাইরে গিয়ে তেমন থাকে না।

ছানার জন্য খাবার নিয়ে চট জলদি বাসায় ফেরে।

মাকে দেখলে ছানাটারও রং-ঢং বেড়ে যায়।

পাখা মেলে দেয়।

মায়ের গায়ে, ঠোঁটে ঠোঁট লাগায়।

মা মুখ থেকে খাবার দেয় ছানাটার মুখে।

বাসার বাইরে গিয়ে মুখে করে পানি নিয়ে আসে।

পানি খাওয়ায় ছানাটাকে।

তারপর পাশে বসে থাকে।

পুঁচকেটার চোখে চোখ রাখে।

মন দিয়ে কি যেন বুঝতে চেষ্টা করে।

ছানাটাও তাকিয়ে থাকে মায়ের দিকে।

আর তাদের দেখে ফেলে রিচার্ড।

ফটোগ্রাফার সে।

ক্লিক ক্লিক করাই তার কাজ।

একটানা সতেরো দিন সে কাঠঠোকরা আর তার ছানাদের চোখে চোখে রাখে।

আর একটু পর ক্লিক ক্লিক করে।

কাঠঠোকরাটা তাকে দেখলে কেমন করে যেন তাকায়।

তবে ভয় পায় বলে মনে হয় না।

রিচার্ড পিচ্চি ছানার দিকে চোখ রাখে।

সে বাসা থেকে বের হয়।

একটু একটু করে উড়তে চায়।

ডানা ঝাপটায়।

আবার ডানা ঝাপটাতে গিয়ে ভয় পেয়ে থমকে যায়।

মাকে ডাকে।

মা কাছে আসে।

তাকে সাহস দেয়।

মুখ থেকে একটু খাবার বের করে মুখে দেয়।

বলে, দে এবার ছোটো করে একটা উড়াল দিয়ে আয়।

ছানাটা রাজ্যের সাহস নিয়ে উড়াল দেয়।

ছোট করে উড়ে ডালটায় এসে বসে।

মা টিপওয়ালা পাখাটা মেলে তার গায়ে পাখা বুলিয়ে দেয়।

ছানাটা আবার উড়াল দেয়।

এবার একটু বড় করে মানে বেশি করে ওড়ে।

মা পাখাতালি দিয়ে ওঠে।

পুঁচকের তো খুশি আর খুশি!

সামনের আরেকটা কড়ি গাছে গিয়ে বসে।

ওমা! গাছের দু ডালের মাঝখানে কেমন একটা গর্ত।

সে গর্তে গোসল করছে আরেকটা কাঠঠোকরা।

পানি দেখে সেও নেমে পড়লো।

দিলো ডুব।

ডুব দিলো তো দিলোই।

ওঠার নাম নেই আর।

মা কাঠঠোকরা উড়ে গিয়ে ছানাটাকে উঠিয়ে নেয়।

গা-টা ঝেড়ে নিতে বলে।

সে পারে না।

মা অভিনয় করে দেখায়।

সে মায়ের মতো করে গা ঝেড়ে নেয়।

মা বাসার দিকে উড়াল দেয়।

মায়ের পিছু পিছু সেও।

এবার মায়ের মতো সে উড়তে পেরে গেলো।

বড় করে একটা উড়াল দিয়ে নিলো।

মাও কিছু বললো না।

মা-টা তার দিকে তাকায় আর মনে মনে বলে, যাক বাবা, তার ডানা মেলার দিনটা ভালোই কেটে গেলো!

 

এ বিভাগের আরো খবর