দেশের নাম বাহামা।
দেশটি মূলত আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বীপদেশ।
এই দ্বীপ দেশের একটা দ্বীপের নাম-ক্যাট আইল্যান্ড।
বাংলায় বিড়াল দ্বীপ।
অনেকে বলেন, এই নামকরণ বিড়ালদের কথা মাথায় রেখে করা হয়নি।
হয়েছে জলদস্যু আর্থার ক্যাটের নামে।
এটি ধারণামাত্র!
আসলে বিড়ালের জন্যই এর নাম হয়েছে বিড়াল দ্বীপ।
এক সময় দ্বীপের অধিকাংশ বাসিন্দাই ছিলো বিড়াল।
হাজার হাজার বিড়াল।
এসব বিড়াল পোষাও ছিলো না আবার বুনোও ছিলো না।
আসলে দ্বীপে মানুষ আসার সময় কিছু বিড়াল এসে পড়েছিলো।
তো ওই পোষা বিড়ালরা এক সময় বুনো পরিবেশে থাকতে থাকতে হয়ে যায় না বুনো না পোষা।
যাই হোক, বিড়াল দ্বীপে এখন আর আগের মতো এতো বিড়াল নেই।
তবে বিড়ালের নামে রয়ে গেছে দ্বীপের নাম।
এদিকে জাপানের একটা দ্বীপও এখন বিড়ালদের দখলে।
দ্বীপটির নাম তাশিরোজিমা।
এখানে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যা বেশি।
এতে করে দ্বীপের সত্যিকার নাম ঢেকে গেছে, ‘বিড়ালের দ্বীপ’ নামের আড়ালে।
বিড়ালগুলোও যাচ্ছে তাই।
যেখানে সেখানে নিজেদের অধিকার আদায় করে ছাড়বেই।
দ্বীপের মানুষগুলোর কথা আর কী বলবো!
বিড়ালগুলোকে আস্কারা দিয়ে একেবারে মাথায় তুলে রেখেছে।
না রেখেই বা উপায় কী!
দ্বীপের মানুষদের বিশ্বাস, ভবঘুরে বিড়ালকে খাওয়ালে নাকি শরীর স্বাস্থ্য ভালো তো থাকেই, আবার সৌভাগ্যও আনে।
তাশিরোজিমা দ্বীপ জাপানের মিয়াগি জেলার ইশিনোমাকি শহরে পড়েছে। দ্বীপে এমনিতেই মানুষজন খুব একটা থাকে না।
বড়জোর সব মিলিয়ে শ’খানেক।
ওদিকে বিড়াল বাবু আর বিড়াল বিবিরা তাদের সংখ্যা বাড়ানোতে কোনো কার্পণ্য করেনি।
তার ওপর মানুষের যত্ন-আত্তি তো আছেই।
সব মিলিয়ে তর তর করে বেড়েছে তাদের জ্ঞাতি-গোষ্ঠী।
দ্বীপে একসময় জনবসতি গড়ে উঠেছিলো রেশম চাষকে কেন্দ্র করে।
এই রেশম গুটির প্রধান শত্রু ইঁদুর।
ইঁদুররের উৎপাত থেকে রেশমগুটি রক্ষার জন্য বিড়াল আমদানী করা হয়েছিল।
একসময় রেশম চাষ ভেস্তে গেলেও, বিড়ালরা টিকে যায়।
ওদিকে মাছ ধরার জন্য জেলেরা এসে আস্তানা গাড়ে দ্বীপে।
রাতে মাছ ধরার জন্য অন্য জায়গার জেলেরা কিছুদিন থেকে যায়।
দ্বীপবাসী বিড়ালরা তখন মিউ মিউ করে এগিয়ে যায় জেলেদের দিকে। জেলেরাও করুণ মুখের বিড়ালদের দিকে তাকিয়ে একটা দুটো মাছ ছুঁড়ে মারে।
জেলেরাও ভালো মাছ পায়।
এরপর বিড়ালকে খুশি রাখতে পারলে নিরাপদে মাছ ধরে ফিরতে পারবে, মাছও পাবে বেশি-এমন ধারণা জন্মে তাদের মধ্যে।
কাজেই খাবারেরও চিন্তাও কমে যায় বিড়ালদের।
কেবল সময় মতো জেলেদের কাছে গিয়ে মিয়াও মিয়াও করলেই হলো।
শুধু তাই নয়, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে হলেও বিড়ালের জীবন বাঁচাতে চেষ্টা করে জেলেরা।
দ্বীপের বিড়ালরা এতই জনপ্রিয় যে, দ্বীপের কিছু বাড়িঘরও বানানো হয়েছে বিড়ালাকৃতির।
এমনকি বিড়ালদের জন্য পবিত্র সমাধিসৌধও আছে দ্বীপে।
অষ্ট্রেলিয়াতেও আছে একটা বিড়াল দ্বীপ।
তবে দ্বীপটার নাম ক্যাঙ্গারু দ্বীপ।
কিন্তু দ্বীপের এখন সর্বোচ্চ বাসিন্দা বিড়াল।
অষ্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম এই দ্বীপে এখন মানুষ থাকে প্রায় চার হাজার।
আর বিড়াল?
লাখেরও বেশি।
কোথা থেকে এলো এতো বিড়াল?
গবেষকদের ধারনা, এরা আফ্রিকা থেকে এসেছে।
তবে কাদের সঙ্গে এসেছিলো তা আর জানা যায়নি।
ওদিকে দিন দিন এই দ্বীপে বিড়ালের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে।
চলো, একবার ঘুরে আসি এই তিনটি বিড়াল দ্বীপের যে কোন একটি থেকে।