বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যেই দ্বীপ শুধুই খরগোশের

  • ডেস্ক   
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ১৯:০৪

‘উসাগি-শিমা’ এই জাপানি শব্দের বাংলা অর্থ ‘খরগোশের দ্বীপ’। ভাবতে পারো, একটা দ্বীপ পুরোই দখল করে নিয়েছে খরগোশরা। চলো, আজ জেনে নিই সেই উসাগি-শিমায় বেড়ে ওঠা খরগোশদের কাণ্ডকারখানার কথা...

জাপান সাগরে হিরোশিমা আর শিকোকু নামে দুটো দ্বীপ আছে।

ওই দ্বীপ দুটোর মাঝে ছোট্ট আরেকটা দ্বীপ।

নাম ওকুনোশিমা।

এই ওকুনোশিমা দ্বীপই এখন খরগোশদের।

খরগোশদের হলো কেমন করে?

১৯২৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ওকুনোশিমা ছিলো জাপানের সেনাবাহিনীর অস্ত্র গুদাম।

তবে বন্দুক, রাইফেল, ট্যাংক কিংবা গোলাবারুদের মতো অস্ত্র নয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাষ্টার্ড গ্যাস নামে এক ধরনের গ্যাস ব্যবহৃত হতো।

এই দ্বীপে রাখা হয়েছিলো ছয় কিলোটন মাষ্টার্ড গ্যাস।

 

দ্বীপে আসার সময় আমাদের জন্য নিয়ে আসতে পারো গাজর

এছাড়া যুদ্ধে যেসব গ্যাসীয় ও রাসায়ানিক পদার্থ ব্যবহার করা হতো, তার ভাগাড় ছিলো এই দ্বীপ।

কারণ একটাই, দ্বীপটি ছিলো লোকচক্ষুর আড়ালে।

কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেও, মানুষজন টের পাবে না।

এজন্য দ্বীপের কথাটা এক প্রকার গোপনই ছিলো জাপানিদের কাছে।

এমনকি জাপানের মানচিত্র থেকেও দ্বীপটিকে মুছে ফেলা হয়েছিলো।

আর ওই দ্বীপে যারা কাজ করতো, তাদের তো মুখ খোলা নিষেধ ছিলো।

তাই দ্বীপে কী হয়, না হয়-ওগুলো কারো কাছে প্রকাশ করা হতো না।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সব ধরনের রাসায়ানিক পদার্থ পুড়িয়ে ফেলা হয়।

আর কিছু মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়।

 

গল্প করছে তারা। চাইলে সেই গল্পে তুমিও যোগ দিতে পারো

 

আর এ ব্যাপার নিয়ে একেবারেই চুপচাপ হয়ে যায় জাপানি কর্তৃপক্ষ।

ওই দ্বীপটিতে মানুষজনের আনাগোনাও ছিলো নিষিদ্ধ।

কারণ মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নানান গ্যাস ভেসে বেড়াতো দ্বীপের বাতাসে।

তারপর কেটে গেলো অনেক বছর।

আবার প্রাণীর বসবাসের উপযুক্ত হয়েছে কিনা এটা পরীক্ষা করতে এক পাল খরগোশ এনে ছেড়ে দেয়া হয় দ্বীপটিতে।

কেউ কেউ বলে, ১৯৭১ সালে একদল স্কুলশিক্ষার্থী বেড়াতে এসেছিলো দ্বীপে।

সঙ্গে আনা আটটি খরগোশকে ওরাই ছেড়ে দিয়ে যায় ওখানে।

 

আমি চিন্তা করছি! কি চিন্তা করছি তা ভুলে গিয়েছি ...

 

তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি।

সাত লাখ বর্গমিটারের দ্বীপটিতে তর তর করে বাড়তে লাগলো খরগোশের সংখ্যা।

দ্বীপটিতে নেই কোনো খরগোশ শিকারি!

কাজেই নির্ভয়ে দ্বীপে ঘুরে বেড়ায় ৩০০-এর বেশি খরগোশ।

আর খরগোশদের কারণে দ্বীপের নামই হয়ে গেছে ‘উসাগি শিমা’ মানে ‘খরগোশের দ্বীপ’।

এখন অবশ্য যে কেউ দ্বীপে ঘুরতে যেতে পারে।

সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে নিজেদের পোষা প্রাণীও।

কেবল কুকুর আর বিড়াল নিয়ে প্রবেশ নিষেধ।

কুকুর-বিড়াল খরগোশদের শত্রু কি না!

 

এই দ্বীপের বাসিন্দা খরগোশ। মন চাইলে দ্বীপটায় ঘুরে আসতে পারো তুমিও

 

খরগোশ দেখতে ওকুনোশিমায় পাড়ি জমায় অনেক পর্যটক।

পর্যটকদের থাকার জন্য একটা রিসোর্টও হয়েছে।

সেই রিসোর্টে একশ ইয়েনে বিক্রি হয় এক কাপ খাবার।

আর এই খাবারটা কিন্তু খরগোশেদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি।

কারণ পরিত্যক্ত দ্বীপটির এতো কদর তো কেবল খরগোশদের জন্যই।

পর্যটকদের আনাগোনাও খরগোশদের টানে।

যদিও এখন দ্বীপটি খরগোশদের দখলে তবে মানুষের আনাগোনাও শুরু হয়েছে।

কবে যে যুদ্ধ শেষ হবে দুনিয়া থেকে আর পৃথিবীর প্রত্যেক জায়গা হয়ে উঠবে সুন্দর!

প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নেবে সব প্রাণী।

এমন সময় নিশ্চয়ই আসবে।

কী বলো তোমরা?

এ বিভাগের আরো খবর