কাজটা করেছিলো বড় ভাই কে কে।
অস্বীকার করে না ছোট ভাই।
কিন্তু বুদ্ধিটা যে ছোট ভাই কা-কা দিয়েছিলো তা স্বীকার করে না বড় ভাই।
এ নিয়ে বহু বছর ধরে দুই ভাই কে কে আর কা কার মধ্যে মান-অভিমান। ঝগড়া-বিবাদ।
শেষে সালিশ।
এ দেশে বুদ্ধি আইডিয়া-পরিকল্পনা পেটেন্ট করার কোনো ব্যবস্থা নেই। বিচারের রায়ে তাই হেরে গেলো ছোট ভাই কা-কা।
বড়রা বললেন, ‘ঠিকই তো। বুদ্ধি কে দিলো, এটা বড় কথা নয়। কাজটা কে করলো, তাই হচ্ছে আসল। কর্মই সত্যি।’
কে কে চেঁচিয়ে উঠলো, ‘আপনারা বললে ওকে বাড়ি থেকে বের করে দেবো।’
বড়রা নরম, ‘এবার মাফ করে দাও।’
ছোট ভাই কা-কা বললো, ‘আংকেল, আমি তো অন্যায় কিছু বলিনি।
উনি সেদিন এক ঢোক পানি খেয়ে আমাদের জন্যই কলসিটা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ছোট ভাইর জন্য উনার সেই দরদের কথা এখনও স্মরণ করি...।’
‘তাহলে সমস্যা কোথায়? মিলেমিশে থাকো দু’ভাই।’
‘ওর সঙ্গে আমি?’ বড় ভাই কে কে রীতিমতো খেঁকিয়ে উঠলো, ‘আর এক মুহুর্ত না। আজই বাড়ি থেকে বের করে দেবো।’
ছোট ভাই কা-কা বড়দের উদ্দেশে বললো, ‘দেখলেন তো? উনার আচরণটাই মারমুখী। বিষয় তো খুব সামান্য। ছোট ভাইকে এইটুকু স্বীকৃতি দিলে ঈশপ আমাদের কথাই
লিখতেন। আর শিল্পী-ভাইবৃন্দ হয়তো আমাদের ছবিই আঁকতেন।’
মুরব্বিরা এক সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘কোন গল্পটা? কোন ছবিটা?’
কা-কা বললো, ‘ওই যে ওই গল্পটা।
আধাকলসি পানি দেখে টুকরো-টুকরো পাথর ফেলে একেবারে উপচে ফেললো কলসিটা।
তারপর মজা করে পান করলো।
... এই যে পাথরের টুকরো ফেলার আইডিয়া প্রথম আমার মাথায়ই আসে। আমি তো ছোট।
তাই দাদাকে বলেছিলাম, তোমার ঠোঁটে বড় বড় টুকরো ধরতে পারবে। অল্পক্ষণেই ভরে যাবে কলসিটা।
কে কে দাদা তখন কিন্তু আইডিয়ার প্রশংসা করেছিলো।
আর এখন স্বীকারই করছে না।’
বড়রা বললেন, ‘তাই তো, তাই তো!’
কে কে চিৎকার করে উঠলো, ‘বেয়াদব। আমি, সালিশে রায় পেয়েছি আমার পক্ষে, তোকে আর বাড়িতে না।’
কেউ কা-কার পক্ষে কথা বললো না। তার ছবিও ওই গল্পে কেউ আঁকলো না।
নাকি এঁকেছিলো? কা-কা জানে না।
তবে ওই ঘটনার পর দাঁড়কাক আর পাতিকাক এক ঘরে থাকে না।