বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শরীফ খানের ঘাসফড়িং অভিযান

  • নিউজবাংলা চিলড্রেন ডেস্ক   
  • ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ০৮:৫১

আমরা দু’জন।

দৌড়াচ্ছি পাল্লা দিয়ে।

বালুর মাঠে।

বারবার হেরে যাচ্ছি আমি।

বালুর ওপর গাছের সরু ডাল ও আঙুল দিয়ে দু’জনই আমরা ফুটিয়ে তুলছি নানা রকম শিল্পকর্ম।

আঁকছি গরু-ছাগল, ফুল-পাখির ছবি।

লিখছি অ-আ-ক-খ।

হঠাৎ আমার বন্ধু দু’হাতে বালু টেনে জড়ো করে।

বানায় বালুর পিরামিড। 

আমাকে বললো, ডগাসহ ঘাস ছিঁড়ে আনতে।

সে ঘাস লাগাবে পিরামিডের মাথায়।

উঠলাম আমি।

অদূরেই বালুভূমির ওপর বড় পাতার নরম কাণ্ডের ঘাসবন।

যেন বালুভূমিতে শুয়ে রোদ পোহাচ্ছে।

বিশাল বিল ভরাট করেছে।

চিকচিকে মিহিদানার সাদা বালু দিয়ে।

মনে হয় বিশাল মরুভূমি।

যাক, ঘাসবনটায় গেলাম আমি।

একটি ডগা ধরে টান দিতেই উড়ল বড় এক ঘাসফড়িং।

বসলো গিয়ে ওপাশে।

ডাকলাম আমার বন্ধুকে।

বললাম ঘাসফড়িংয়ের কথা।

বালুর ওপর দিয়ে সে যেন উড়ে এলো, ফড়িং দেখার জন্য।

গা টিপে টিপে এগোচ্ছি দু’জন! কাছে গিয়ে দেখলাম।

না, আমাকে ধরতে দেবে না সে, নিজেই ধরবে।

জলফড়িং গঙ্গফড়িং ও প্রজাপতি ধরতে সে জানে।

সেভাবেই হাত বাড়াচ্ছে ফড়িংটার দিকে। ধরার আগেই ওটা উড়াল দিয়ে চলল অনতিদূরের আরেকটি ঘাসবনের দিকে।

না, নজরে পড়ে গেলো একটি পাতি কাকের।

উড়ে এসে ঠোঁট চালালো।

ফড়িংটি পড়লো বালুভূমিতে।

তেড়ে আসছে কাকটাকে বকা দিতে দিতে; একটি ফিঙে।

ফড়িং এদের অতি প্রিয় খাবার।

ফড়িং হলো নিচে।

কাক-ফিঙে শূন্যে পরস্পরকে আক্রমণের চেষ্টা করছে।

আমি ছুটলাম, পেছনে আমার বন্ধু।

কাক-ফিঙে পালালো।

হাতে তুললাম ফড়িংটিকে।

কাকের ঠোঁটের চোট খেয়ে আহত।

তবে ভল হয়ে যাবে।

পলিথিনে পুরে ওটাকে নিয়ে এলাম দু’কিলোমিটার দূরে।

আমার মুগদাপাড়ার বাসায়।

ঘটনাটি গত ডিসেম্বরের।

মান্ডা বিলের বালুর মাঠের।

আমি আর আমার বন্ধুর নিয়মিত যাতায়াত ওই অঞ্চলে।

বন্ধুটি হলো আমার তিন বছর ৮ মাস বয়সী পোতা-অর্নিভ খান। ঘাসফড়িংটিকে রাতে বসিয়ে ছিলাম ছাদের লাউ-কুমড়োর পাতার ওপর। তার আগে ছবি তোলা হলো।

মাপজোক ওজন নেওয়া হলো।

রাতে যাতে শত্রুর কবলে না পড়ে বা উড়ে যেতে না পারে সে ব্যবস্থাও করলাম।

ঘাসফড়িংটির ওজন মাত্র ২ গ্রাম।

দৈর্ঘ ৬ সে.মি।

ডানা বা পাখার দৈর্ঘ সাড়ে ৫ সে.মি।

একনজরে- রঙ বাদামি, বুক-পেটে বাদামি রেখা, পাখাও একই রকম। রেখায় রঞ্জিত।

পাখায় হলুদাভ রঙ আছে।

পাখা মোট দু’জোড়া।

পরদিন ভোরে গিয়ে দেখি ফড়িংটা নড়ছে, উড়ে যেতে প্রস্তুত।

ছয় তলার ছাদ থেকে উড়লেই ওটা কাক-বুলবুলি-ফিঙের কবলে পড়বে। অতএব, আমরা দু’বন্ধু সেখানেরই সেই ঘাসবনে ছেড়ে দিয়ে এলাম ওটাকে, যেখানে ছিলো ওটা গতকাল।

এ বিভাগের আরো খবর