রাতে ঘুমোনোর ড্রেসের সঙ্গে তোমার স্কুল ড্রেসের মিল থাকে না।
শপিং ড্রেসের সঙ্গে থাকে না সুইমিং ড্রেসের মিল।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও বদলে যায় ড্রেস।
তবে কখনও কি তোমার শরীরের রং বদলের কথা ভেবেছো?
বলবে, এটা আবার কেমন ভাবনা!
তোমরা যারা ভাবুক, তারা শরীরের রং বদলের কথা না ভাবলেও প্রকৃতির রং বদলের কথা ভাবো।
গ্রীষ্ম শেষে কালো মেঘ আর বৃষ্টি নিয়ে আসে বর্ষা।
পানিতে টইটম্বুর থাকে খাল-বিল, নদী-নালা।
বর্ষা শুকিয়ে শরৎ।
গ্রীষ্মের খেঁকশিয়াল
তারপর ধারাবাহিকভাবে আসে হেমন্ত, শীত ও বসন্ত।
এ ঋতুগুলোতে প্রকৃতি রং পরিবর্তন করে।
সাজে একেক সাজে।
তোমরা উত্তর মেরুর নাম শুনেছো নিশ্চয়ই।
এ মেরুর কিছু প্রাণী প্রকৃতির এ পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের শরীরের রংও পরির্তন করে নেয়।
ভাবছো, কীভাবে সম্ভব?
একই খেঁকশিয়াল শীতে দেখো কেমন সাদা
এ প্রাণীগুলোর বেলায় বলাই যায় যে, অসম্ভব বলে কোনো কথা নেই।
উত্তর মেরু বা সুমেরু অঞ্চলের অন্যতম প্রাণী টামির্গান।
এটি আমাদের বুনোহাস জাতীয় পাখি।
গ্রীষ্মে এদের পালক কালো বা ধূসর থাকলেও শীতের আগমন টের পেলেই তারা তাদের পালক সাদা করে নেয়।
তখন তাদের দেখতে একেকটা পুঁচকে মেঘের টুকরো মনে হয়!
শুধু কি তাই?
এ সময় শরীর বেয়ে তাদের পালক নেমে আসে পায়ে।
শীতের সময় তারা গরমের উপযোগী ঘর বানিয়ে নেয়।
যে ঘর প্রচণ্ড শীত থেকে তাদের বাঁচায়।
গ্রীষ্মের বাদামি টার্মিগান
গুঁড়ো গুঁড়ো তুষারপাতে যখন ব্যস্ত হয়ে যায় উত্তর মেরু তখনও তারা নিশ্চিন্তে উড়ে বেড়ায় চারদিক।
উত্তর মেরুর আরেক রং বদল করা প্রাণী স্থানীয় খেঁকশিয়াল।
শরতে এ প্রাণীর বাদামি রং কমতে থাকে।
কালচে বাদামি এ প্রাণীর রং পরিবর্তনের রহস্য হচ্ছে, রঞ্জক পদার্থ, যা তাদের পশমের গোড়ায় থেকে কাজ করে।
শরতে এ পদার্থ তাদের রাঙিয়ে তোলে।
কিন্তু শীতে এ রঞ্জক পদার্থ কাজ করতে না পারায় এরা সাদা হতে থাকে। একেবারে চোখ ধাঁধানো সাদা!
তখন তাদের দেখে শ্বেত ভালুক ভেবে ভুল করে অনেকেই।
তবে গোলমাল বাধে বসন্তে।
বসন্তে টার্মিগান অন্য রকম দেখাচ্ছে
তখন তাদের শরীরের রং উলট-পালট হয়ে যায়।
একেবারে খাপছাড়া যাকে বলে আরকি!
শরীরের বাহারি রং দিয়ে শত্রুদের ধোঁকা দিতে এখানকার বড্ড জানু প্রাণীটার নাম তুষার শুভ্র খরগোশ।
মায়াবী খরগোশ বললেও মন্দ হয় না!
শীতের টার্মিগানটাকে সাদা পায়রার মতো লাগছে
শরতে এদের লোম অনেকটা জোড়া তালি দিয়ে বড় হয়।
তবে দূর থেকে দেখে তা বোঝার সাধ্য নেই কারও।
শরতের কালচে বাদামি রংয়ের এ প্রাণীও শীতে সাদা রূপ ধারণ করে।
তবে জোড়া-তালি দিয়ে বড় হওয়া তাদের পশম নিজেদের অনেক কাজে দেয়।
প্রথম কাজ শত্রুকে বোকা বানানো।
আজব না?