যুক্তরাষ্ট্রে অভিভাবকদের অসচেতনতায় গাড়ির তাপ বেড়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। দেশটিতে ১৯৯০ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে গাড়ির উত্তাপ বেড়ে মৃত্যু হয় ৯৪০ জনের বেশি শিশুর। বিষয়টি নাড়া দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ১৫ বছর বয়সী কিশোর প্রণব জোশুয়া ভাল্লাভানেনিকে। তিনি এমন একটি ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন, যা বাঁচাতে পারে অনেক শিশুর প্রাণ।
দ্য ফিলাডেলফিয়া ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পেনসিলভানিয়ার কেনেট স্কয়ার এলাকার ইউনিয়নভিল হাই স্কুলের ছাত্র প্রণব। জেডেন নামে চার বছর বয়সী ভাই রয়েছে তার। জেডেনের জন্মের আগে থেকেই গাড়িতে শিশু মৃত্যু প্রতিহত করা নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। প্রণব উদ্ভাবিত ডিভাইসটির নাম 'হট কার অ্যালার্ট'। গাড়ির তাপ নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি হয়ে গেলে অভিভাবক ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে ধাপে ধাপে সংকেত পাঠাবে ডিভাইসটি।
প্রথম ধাপে অভিভাবকদের মোবাইলে সংকেতটি পাঠানো হবে। দ্বিতীয় ধাপে গাড়িতে একটি শব্দ হবে, যাতে আশপাশে থাকা অভিভাবকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। এর পরের ধাপে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সংকেত পাঠানো হবে। যন্ত্রটি কর্তৃপক্ষকে গাড়িটির অবস্থান ও বিপদের আশঙ্কা নিয়ে অবহিত করবে।
প্রণব জানান, গাড়ির তাপমাত্রা বেড়ে গেলে যন্ত্রটির মাধ্যমে সহজেই তা কমানো যাবে। একই সঙ্গে গাড়ির ভৌগোলিক অবস্থানের সঙ্গে সমন্বয় করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে গাড়ি গরম হয়ে গত বছরেই মৃত্যু হয় ৫৩ শিশুর। এ নিয়ে প্রণব বলেন, 'গাড়ির ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে শিশুদের মর্মান্তিক মৃত্যু আমাকে ভাবায়। সেই তাগিদ থেকেই এ নিয়ে কাজ করা শুরু করি।'
তিনি বলেন, কাজের ব্যস্ততায় গাড়িতে শিশু রেখে আসার কথা ভুলে যান অনেক মা-বাবা। গাড়িতে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াজনিত মোট মৃত্যুর ৫০ শতাংশেরও বেশি হয় এ কারণে। এটি খুবই দুঃখজনক।
চার বছর বয়সী ভাইয়ের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রণব বলেন, 'আমার পরিবারে এ ধরনের ভয়ংকর কিছু ঘটুক, তা চাই না।'
নিজের বিজ্ঞান ক্লাসে ডিভাইসটির ধারণা ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ শুরু করেন প্রণব। একপর্যায়ে তিনি এটি উদ্ভাবনে সক্ষম হন। চলতি বছরের জুলাইয়ে 'ইনভেনশন কনভেনশন ওয়ার্ল্ডওয়াইড' নামের একটি সংস্থা প্রণবের এই উদ্ভাবনের প্রশংসা করে। এ কাজের জন্য তাকে দুইটি পুরষ্কার দিয়েছে সংস্থাটি।