বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ ‘অকার্যকর’: ডোনাল্ড ট্রাম্প

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২১:২৬

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের বিতর্ক পর্বে ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভাষণে জাতিসংঘের কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি। দাবি করেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ অকার্যকর।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন চলছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে বিতর্ক-পর্ব। এই পর্বের শুরুতে ভাষণ দেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস। এরপর বক্তব্য রাখেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের পর পোডিয়ামে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে। আমি সবসময় বলেছি - এর এত অসাধারণ, অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এটি তার কাছাকাছিও পৌঁছাচ্ছে না।’

ভাষণে ট্রাম্প নিজেই নিজের প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকটা সংঘাত থামানোয় তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তার দাবি, তিনি সাতটি যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছেন। যদিও এই মধ্যস্থতার বেশ কয়েকটিতে ওয়াশিংটনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ ‘অকার্যকর’ দাবি করে ট্রাম্প বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বলেন, এসব ‍যুদ্ধ থামানোয় তিনি নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাওয়ার যোগ্য। তার কথায়, ‘এটা খুবই খারাপ যে জাতিসংঘের পরিবর্তে আমাকে এই কাজগুলো করতে হয়েছে এবং দুঃখের বিষয়, সমস্ত ক্ষেত্রেই জাতিসংঘ এর কোনোটিতেই সাহায্য করার চেষ্টা করেনি।’

ট্রাম্প তার ভাষণের শুরুতেই অভিযোগ করেন, জাতিসংঘের সদর দপ্তরে তিনি একটি ভাঙা লিফট পেয়েছেন। এরপর ভাষণ দেয়ার সময় টেলিপ্রম্পটারকে অকার্যকর দেখতে পান। তার কথায়, ‘জাতিসংঘ থেকে আমি এই দুটি জিনিস পেয়েছি, একটি খারাপ এসক্যালেটর এবং একটি খারাপ টেলিপ্রম্পটার।’

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হামাসকে পুরস্কৃত করার শামিল বলে উল্লেখ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, সংঘাতকে আরও উৎসাহিত করতে জাতিসংঘের কিছু সদস্য একতরফাভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করছে। তা হবে হামাসের সন্ত্রাসীদের নৃশংসতার জন্য অনেক বড় পুরস্কার হবে। ৭ অক্টোবরের ঘটনাসহ ভয়াবহ নৃশংসতাগুলোর জন্য হামাসের পুরস্কার।

সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আসার একাধিক দেশের সরকারপ্রধান ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এরই মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধ শুরুর প্রায় দুই বছর পর এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে জাতিসংঘ।

সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালামানকে সঙ্গে এক বৈঠকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ঘোষণা দেন, ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। তিনি বলেন, ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা ধরে রাখতে আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করতে হবে।’

একই বৈঠকে ইউরোপের দেশ লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, মোনাকো ও বেলজিয়ামও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা দেয়। এর আগে এই সপ্তাহে কানাডা, ব্রিটেন, পর্তুগাল ও অস্ট্রেলিয়াও একই ঘোষণা দিয়েছে।

জাতিসংঘের ভাষণে একের পর এক দেশ কর্তৃক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপকে ‘ভুল বার্তা’ আখ্যা ট্রাম্প। তার মতে, এমন পদক্ষেপ কেবল সহিংসতাকে উৎসাহিত করবে এবং শান্তি প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ‘প্রধান অর্থদাতা’ ভারত ও চীন। কারণ তারা রাশিয়ার তেল ক্রয় অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি মস্কো থেকে জ্বালানি আমদানি কমাতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য ন্যাটো দেশগুলিরও সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প বলেন, ‘চীন ও ভারত রাশিয়ার তেল ক্রয় অব্যাহত রেখে চলমান যুদ্ধের প্রধান অর্থদাতা। এই বিষয়টি অমার্জনীয়। পাশাপাশি ন্যাটো দেশগুলিও রাশিয়ান জ্বালানি এবং পণ্য আমাদানি খুব বেশি বন্ধ করেনি। আমি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে জানতে পেরেছিলাম এবং আমি খুশি ছিলাম না। তারা নিজেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অর্থায়ন করছে। কেউ কখনও এই কথা শুনেছে?’

তিনি বলেন, ‘যদি রাশিয়া শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রস্তুত না হয়, তাহলে ওয়াশিংটরে কঠোর শুল্ক আরোপের জন্য প্রস্তুত হও। আমার বিশ্বাস, এতে খুব দ্রুত রক্তপাত বন্ধ হবে। পাশাপাশি ইউরোপীয় দেশগুলিকে এই ধরনের পদক্ষেপ কার্যকর করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এক বছর আগে, আমাদের দেশ গভীর সংকটে ছিল। কিন্তু আজ আমরা সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। আমেরিকা সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি, সীমান্ত, সামরিক বাহিনী, বন্ধুত্ব এবং চেতনায় আশীর্বাদপ্রাপ্ত। আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কর কর্তন চালু করেছে, যখন শেয়ার বাজার শক্তিশালীভাবে কর্মক্ষম ছিল এবং মজুরি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। গত চার মাস ধরে, আমাদের দেশে অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশের সংখ্যা শূন্য। আমাদের বার্তা খুবই সহজ, আপনি যদি অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন, তাহলে আপনাকে জেলে যেতে হবে।’

বিশ্বব্যাপী সংঘাতের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তিনি ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে সাতটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন। তিনি ইসরায়েল ও ইরান, পাকিস্তান ও ভারত, রুয়ান্ডা ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান, মিশর ও ইথিওপিয়া এবং সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, অন্য কোনও রাষ্ট্রপতি এর কাছাকাছি কিছু করেননি।

এ বিভাগের আরো খবর