বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট শুরুর অপেক্ষা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৪ নভেম্বর, ২০২৪ ২৩:১০

নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ভোটের লড়াইটা তীব্র হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই লড়াইয়ে বিজয়ী কে হবেন তা জানতে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে। তবে সব পূর্বাভাসই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আর কয়েক ঘণ্টা পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হবে।

আগামী চার বছর যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিসহ বিশ্ব রাজনীতির মেরুকরণে কে করবে প্রভাব বিস্তার, এমন প্রশ্ন নিয়ে বিশ্ববাসীর নজর এখন এই নির্বাচনের দিকে।

ডেমোক্রেটিক পার্টির ‘গাধা’ আর রিপাবলিকান পার্টির ‘হাতি’ প্রতীকে এ ভোট-প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফল পেতে অবশ্য কয়েক দিন সময় লেগে যাবে। ঘটনাচক্রে তা একটু দীর্ঘও হতে পারে।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত দুই প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডনাল্ড ট্রাম্প।

এর মধ্যে রোববার (৩ নভেম্বর) মিশিগানে প্রচারের সময় গাজায় যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা হ্যারিস। আরব-আমেরিকান ভোটারদের সমর্থন পেতেই তিনি এমন প্রতিশ্রুতি দেন।

কমলা বলেন, গাজায় মৃত্যু ও ধ্বংসের মাত্রা এবং লেবাননে বেসামরিক হতাহত ও বাস্তুচ্যুত পরিস্থিতির কারণে এ বছরটি কঠিন ছিল।

ক্ষমতায় এলে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে সর্বোচ্চ চেষ্টার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

গাজা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ইসরায়েলের নিরাপত্তার কথাও উঠে আসে কমলার বক্তব্যে।

একই দিন পেনসিলভানিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনায় প্রচার চালান রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প।

জো বাইডেনের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেন, ব্যর্থতার জন্য ডেমোক্র্যাটদের লজ্জিত হওয়া উচিত।

রিপাবলিকান পার্টি জিতলে আগামী চার বছর স্বর্ণযুগে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ভোটের লড়াইটা তীব্র হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই লড়াইয়ে বিজয়ী কে হবেন তা জানতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে। তবে সব পূর্বাভাসই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ও সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে জোর লড়াই হবে। কয়েকটি এলাকায় ব্যবধান খুবই কম হতে পারে। ফলে পুনরায় ভোট গণনারও প্রয়োজন পড়তে পারে। আর ভোটের ব্যবধান খুব কম হলে বা কোনো প্রার্থী নির্বাচনি জালিয়াতির অভিযোগ আনলে ফল ঘোষণায় আরও বেশি সময় লাগতে পারে।

জরিপ যা বলছে

জাতীয়ভাবে ভোটারদের নিয়ে যেসব জরিপ হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কমলা। জুলাইয়ে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন।

জাতীয়ভাবে যেসব জনমত জরিপ হয়েছে, তার গড় করে দেখা যাচ্ছে, রোববার পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন ৪৮ শতাংশের। আর ট্রাম্পের সমর্থন ৪৭ শতাংশ।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার পর নির্বাচনি প্রচার শুরুর প্রথম দিকের সপ্তাহগুলোতে কমলা হ্যারিসের দিকে সমর্থন বেশি ছিল। আগস্টের শেষে দেখা গিয়েছিল, ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় চার পয়েন্টে এগিয়ে কমলা।

সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের শুরুর দিক পর্যন্ত সেই অবস্থান ধরে রেখেছিলেন কমলা হ্যারিস, তবে শেষ কয়েক সপ্তাহে দেখা গেছে, জরিপে কমলার সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান কমে এসেছে।

একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গোটা দেশে কতটা জনপ্রিয়, তা জানার জন্য জাতীয়ভাবে করা জরিপগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্ত নির্বাচনে ফলাফল অনুমানের জন্য জাতীয় জরিপই সবচেয়ে ভালো উপায় নয়। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে। এ পদ্ধতিতে জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য পৃথক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বরাদ্দ থাকে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট আছে ৫৩৮টি। এর মধ্যে ২৭০টি প্রয়োজন জয়ের জন্য। এক রাজ্যে যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন, সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনিই পাবেন।

নির্বাচনে চূড়ান্ত ফল নির্ধারণী দোদুল্যমান সাত রাজ্যে শেষ সময়ের জরিপে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে চমক দেখা গেছে। সোমবার ব্রাজিল-ভিত্তিক জরিপ সংস্থা অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপের ফলে বলা হয়েছে, দোদুল্যমান সাত রাজ্যের সবক’টিতে কমলা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তাদের ব্যবধান একেবারে সামান্য।

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ডেমোক্র্যাট দলীয় কমলা হ্যারিসের মাঝে ব্যাপক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে অন্যান্য জনমত জরিপেও। অ্যাটলাস ইনটেলের জরিপে দেখা গেছে, দোদুল্যমান রাজ্য অ্যারিজোনায় জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং হ্যারিসের প্রতি ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।

দোদুল্যমান আরেক রাজ্য নেভাদায় জরিপে অংশ নেওয়া ৫১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবং ৪৬ শতাংশ হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়েছেন। এ ছাড়া নর্থ ক্যারোলিনায় ট্রাম্প ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ জনসমর্থন।

অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপ অনুযায়ী জর্জিয়া রাজ্যেও এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই রাজ্যে ৫০ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবং ৪৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান বলে জানিয়েছেন।

মিশিগানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং হ্যারিসের প্রতি ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।

এছাড়া পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ৬ ও কমলা হ্যারিস ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ এবং উইসকনসিনে ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ৭ ও হ্যারিস ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছেন।

কমলার আলোচিত বক্তব্য

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা ১৩ মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ। এ বিষয়ে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস বলেছেন, গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে তিনি তার ক্ষমতার সব কিছু করবেন। সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

ট্রাম্পের আলোচিত বক্তব্য

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করে রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচিত হলে সীমান্ত খুলে দেবেন কমলা হ্যারিস, যাতে অভিবাসী, সংঘবদ্ধ গ্যাং ও অপরাধীরা অনুপ্রবেশ করতে পারে।

দেশটির নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের কিনস্টনে রিপাবলিকান পার্টির এক সমাবেশে এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, কমলা হ্যারিসের কোনো রূপকল্প নেই, কোনো ধারণা নেই এবং কোনো সমাধান নেই। তার একমাত্র বার্তা হলো বিভিন্ন সমস্যার জন্য তিনি নিজেকে দোষারোপ করছেন।

আর কে কে লড়ছেন এই নির্বাচনে?

যুক্তরাষ্ট্রে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়া আরও চারজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রয়েছেন।

রবার্ট জুনিয়র কেনেডি

এবারের নির্বাচনে অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি রবার্ট কেনেডি জুনিয়র। তার পক্ষে এবারের নির্বাচনে ৫-৭ শতাংশ সমর্থন ছিল। কিন্তু গত আগস্ট মাসে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। তবে কয়েকটি অঙ্গরাজ্য তার নাম ব্যালট থেকে সরাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ট্রাম্পের পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালানো কেনেডি নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবেন তা স্পষ্ট নয়।

কর্নেল ওয়েস্ট

গ্রিন পার্টির নেতা, বর্ণবাদবিরোধী ৭১ বছর বয়সী কর্নেল ওয়েস্ট একজন শিক্ষাবিদ। তিনি স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাইডেনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ ও ট্রাম্পকে ‘নব্য ফ্যাসিস্ট’ বলে মনে করেন কর্নেল ওয়েস্ট। তিনি ১২টিরও বেশি অঙ্গরাজ্যে লড়ছেন। তার সমর্থন অল্প হলেও ডেমোক্র্যাট শিবিরের জন্য তিনি বড় দুশ্চিন্তার নাম।

চেজ অলিভার

লিবার্টারিয়ান পার্টির নেতা চেজ অলিভার ২০২০ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সে সময় ১ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়েছিলেন। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রায় সব কটিতেই লড়ছেন তিনি। তাকে এবারের নির্বাচনের সম্ভাব্য অঘটন সৃষ্টিকারী ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। সাবেক ডেমোক্র্যাট ৩৯ বছর বয়সী অলিভার মুক্তবাণিজ্য ও ছোট আকারের সরকার ব্যবস্থার পক্ষে প্রচার চালান।

জিল স্টেইন

বামপন্থী এ নেতা গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট। পেশায় চিকিৎসক ও পরিবেশকর্মী। বর্তমানে তার বয়স ৭৪ বছর। এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওই সময় তিনি যথাক্রমে দশমিক ৪ শতাংশ ও ১ শতাংশ করে ভোট পেয়েছিলেন।

শিকাগো শহরে জন্ম নেয়া জিল স্টেইন এবার ৪০টি অঙ্গরাজ্যে লড়ছেন। তাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথা ডেমোক্র্যাট শিবিরে। কারণ তিনি কমলা হ্যারিসের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ভোট তার পক্ষে টানতে পারেন।

এ বিভাগের আরো খবর