মধ্যপন্থী বিরোধী নেতা বেনি গান্টজ ও তার মিত্র গাদি আইসেনকোটের পদত্যাগের এক সপ্তাহের ব্যবধানে রোববার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার ছয় সদস্যের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়েছেন।
ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ভেঙে দেয়ায় এখন গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো একটি সংক্ষিপ্ত ফোরামে আলোচনা করা হবে।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিষয়টি কমান্ড চেইনকে প্রভাবিত করবে না।
সাবেক দুই সেনাপ্রধান গান্টজ ও আইসেনকোট প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংঘাত-পরবর্তী গাজা নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, অক্টোবরে গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন পর নেতানিয়াহুর ডানপন্থি জোটের সঙ্গে তারা জাতীয় ঐক্যের সরকারে যোগ দেন।
জেরুজালেম পোস্টে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু রোববার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ভেঙে দেয়ার আগে মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন- যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা তার অনুরোধে গান্টজের সঙ্গে জোট চুক্তিতে যোগ দিয়েছে। তাই গান্টজ চলে যাওয়ার পর আর মন্ত্রিসভার প্রয়োজন নেই।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, যুদ্ধ মন্ত্রিসভায় আগের আলোচিত কিছু বিষয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় আলোচনার জন্য স্থানান্তর করা হবে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় রয়েছেন কট্টর ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থমন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোট্রিচ।
সংবেদনশীল সিদ্ধান্তগুলো একটি ছোট ফোরামের অধীনে নেয়া হবে। ফোরামে ডিফেন্স মিনিস্টার ইয়োভ গালান্ট, স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার রন ডারমার এবং যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার পর্যবেক্ষক শাস পার্টির চেয়ারম্যান আরেহ দেরি থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নেতানিয়াহু যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় যোগদানের জন্য তার ক্ষমতাসীন জোটের কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রীদের চাপের মুখোমুখি হয়েছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মিত্রের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
আইডিএফের প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি সোমবার দাবি করে,ন এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের সামরিক কৌশলে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও কিছু পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তবে আমাদের নেতৃত্ব নিয়ে সমস্যা নেই। আমরা চেইন অফ কমান্ড জানি এবং চেইন অফ কমান্ড অনুযায়ী কাজ করছি। এধরনের পরিবর্তন গণতন্ত্রের একটি অংশ।’
প্রসঙ্গত, অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৩৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী-শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক।