ৱইসরায়েলি আগ্রাসনে মানবেতর জীবনযাপন করা ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের কল্যাণ কামনা ও তাদের জন্য ত্রাণ হিসেবে খাবার পাঠানোর মাধ্যমে সোমবার এশিয়ার দেশে দেশে মুসলমানরা ত্যাগের উৎসব ঈদুল আজহা পালন করছেন।
নবী হজরত ইব্রাহীম (আ.)-এর বিশ্বাস ধারণ করে ঈদুল আজহার নামাজ এবং গবাদি পশু জবাই ও গরিবদের মাঝে মাংস বিতরণের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মুসলিমরা দিনটি পালন করছেন। এটি এমন একটি কল্যাণকর উৎসব, যেদিন সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কিনে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। আর জবাই করা পশুর মাংসের দুই-তৃতীয়াংশ দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করে থাকেন। সৌদি আরবে হজযাত্রার চূড়ান্ত অনুষ্ঠানের সঙ্গে এই দিনটি মিলে যায়।
ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশসহ এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে সোমবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। তবে সৌদি আরব, লিবিয়া, মিসর, ইয়েমেনসহ বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের মুসলমানরা একদিন আগে (রোববার) ঈদ উৎসব পালন করেছেন।
সোমবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় মুসল্লিরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের নামাজে অংশ নেন। ঈদের জামাতের আগে বক্তব্যে ইমামগণ গাজা ও রাফায় যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি মুসলিমদের কল্যাণ কামনায় সবাইকে প্রার্থনার আহ্বান জানান।
দক্ষিণ জাকার্তার একটি ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ পড়ার পর আদি প্রাসেত্য নামের একজন বলেন, ‘ফিলিস্তিনে কষ্টপীড়িত ভাই ও বোনদের প্রতি আমার প্রার্থনা ও সমবেদনা রয়েছে। দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে এখন সেখানে সাহায্য পাঠানোর অনেক উপায় আছে।’
বেরলিনা ইয়ুস্তিজা নামের আরেকজন বলেন, ‘আল্লাহ যুদ্ধবিধ্বস্তদের শক্তি দিন। যারা আত্মীয়দের ছেড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন, তারা যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারেন।’
এদিন ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন ভারতের মুসলমানরাও। দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলিম।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক জামে মসজিদে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন হাজার হাজার মুসল্লি। সকাল থেকেই মসজিদ প্রাঙ্গণ লোকারণ্য হয়ে যায়। এসময় তারা একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং নামাজ শেষে কোলাকুলি করেন।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশেও ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ হয়ে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্বের প্রত্যাশায় দেশের মুসলমানরা ঈদের নাজাম আদায় করেছেন।
ঈদের জামাতগুলোতে নিপীড়নের শিকার ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়।
দিনটি উদযাপনে আল্লাহর উদ্দেশে সারা দেশে লাখ লাখ গবাদি পশু কোরবানি দেয়া হচ্ছে।