ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকতায় হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে অস্ত্র পাঠানো হবে না বলে যে হুমকি এসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে, তা থেকে সরে এসে নতুন করে অস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, হোয়াইট হাউস মঙ্গলবার কংগ্রেসকে অনানুষ্ঠানিকভাবে এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখন শুধু কংগ্রেসের অনুমোদন লাগবে। এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি সমমূল্যের অস্ত্র পাঠাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে ইসরায়েলি বাহিনী বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সপ্তাহখানেক আগের ওই ঘোষণার পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র পাঠানোর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদেন বলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্যাকেজের মধ্যে ট্যাংকের গোলাবারুদ, মর্টার এবং কৌশলগত সাঁজোয়া যান অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এখন শুধু আইন প্রণেতাদের দ্বারা অনুমোদিত হলেই এই অস্ত্র পাঠানো যাবে।
বাইডেন প্রশাসনের ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করার এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথম বারের মতো এবার অস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এপির তথ্য বলছে, এর মধ্যে ৭০০ মিলিয়ন মূল্যের ট্যাংক গোলাবারুদ, ৫০০ মিলিয়নের কৌশলগত যান এবং ৬০ মিলিয়নের মর্টার থাকবে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইসরায়েলকে দেয়া কিছু আমেরিকান-নির্মিত অস্ত্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।
এর আগে গত সপ্তাহে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, যদি তারা (ইসরয়েল) রাফাতে যায়, আমি সেই অস্ত্র সরবরাহ করব না যা রাফাকে মোকাবিলায় ঐতিহাসিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন দৃঢ় এবং কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও ইসরায়েল রাফাতে একটি বড় আকারের আগ্রাসন চালানোর জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।
এই হুমকির আগেও রাফাতে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্ভ্যাব্য হামলার পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে একটি বোমার চালান স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।এক কর্মকর্তা তখন বলেন, ‘আমরা অস্ত্রের একটি চালান স্থগিত করেছি। এতে ১৮০০টি ২০০০-পাউন্ড (৯০৭ কেজি) ওজনের এবং ৫০০-পাউন্ড (২২৬ কেজি) ওজনের ১৭০০টি বোমা ছিল।’
ওয়াশিংটনের বিরোধিতা সত্ত্বেও ইসরায়েল যখন রাফাতে একটি বড় স্থল অভিযানের দ্বারপ্রান্তে, তখন বাইডেন প্রশাসন ওই সিদ্ধান্ত নেয়।দক্ষিণ গাজার ঘনবসতিপূর্ণ অংশ রাফা হামাসের শেষ প্রধান শক্ত ঘাঁটি। এ এলাকায় ইসরায়েলিহামলা বহু বেসামরিক লোকের প্রাণহানির কারণ হতে পারে।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি সামরিক হামলায় সাড়ে ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৮ হাজারের মতো আহত হয়েছেন। আর হামাসের হামলায় নিহত হয়েছেন এক হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি।