ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে হটিয়ে দিলেও বিক্ষোভ থামেনি।
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (এমআইটি) ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা নিজেদের ক্যাম্প আবারও দখল করে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির মুখপাত্র।
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, ক্যাম্পাসের প্রতিবাদ শিবির ত্যাগ করার জন্য এমআইটি কর্তৃপক্ষের জারি করা নির্দিষ্ট সময়সীমা না মেনে সোমবার ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা শিবির পুনরুদ্ধার করে।
এমআইটি কর্তৃপক্ষ এর আগে সোমবার বিকেলের মধ্যে স্বেচ্ছায় ক্যাম্পাসে স্থাপন করা শিবির ত্যাগ না করলে প্রতিবাদকারীদের অ্যাকাডেমিক স্থগিতাদেশের মুখোমুখি হতে হবে জানিয়ে সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়।
এমআইটির ওই মুখপাত্রের মতে, বিক্ষোভকারীদের অনেকেই স্বেছায় চলে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে কিছু শিক্ষার্থী আসার পর তারা ক্যাম্পাসের সীমানা দেয়া নির্দিষ্ট বেড়া পেরিয়ে এতে প্রবেশ করে।
তিনি জানান, সোমবার রাতে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী ক্যাম্পাসে একটি শান্ত পরিবেশে ক্যাম্পে রয়ে যান এবং রাতের খাবারের বিরতির আগ পর্যন্ত বক্তাদের কথা শোনেন ও স্লোগান দিতে থাকেন।
গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে থাকা ইহুদি শিক্ষার্থীদের একজন শিক্ষার্থী স্যাম ইহন্স। ক্যাম্পে অবস্থানরত এমআইটির যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের দলটি দুই সপ্তাহ ধরে ক্যাম্পে আছে এবং আমরা গাজায় হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে আমাদের ক্যাম্পটি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এমআইটির গবেষণার সম্পর্কগুলোর প্রতিবাদ করছে।’
এমআইটির মেডিক্যাল নৃবিজ্ঞান ও নগর অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং অ্যালায়েন্স অফ কনসার্নড ফ্যাকাল্টির উপদেষ্টা এরিকা ক্যাপল জেমস শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার আশা দিনটি শারীরিক সহিংসতা ছাড়া এবং কারও ক্ষতি না করেই শেষ হবে। একইসঙ্গে প্রত্যাশা করছি যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মীদের মধ্যে আবার আলোচনার জায়গা তৈরি হবে।’
এমআইটি মুখপাত্র জানান, সোমবার রাত পর্যন্ত কাউকে আটক করার মতো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে রোড আইল্যান্ড স্কুল অফ ডিজাইনে (আরআইএসডি) ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা সোমবার একটি ভবন দখল করতে শুরু করেছে বলে জানান কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র।
তিনি বলেন, ‘স্কুলটি শিক্ষার্থীদের বাক-স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করে এবং তারা তাদের স্কুলের সব সম্প্রদায়ের সব সদস্যকে সমর্থন করে।’
আরআইএসডি সভাপতি এবং প্রভোস্ট বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন বলেও জানান ওই মুখপাত্র।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে প্রায় তিন সপ্তাহ আগে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ শুরু হওয়া কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তারা সোমবার জানান, কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের প্রধান আয়োজন গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান বাতিল করেছে।
একইসঙ্গে তারা বলেছেন, শিক্ষার্থীরা চলতি ও পরের সপ্তাহে ছোট আকারের স্কুলভিত্তিক অনুষ্ঠানগুলো উদযাপন করতে সক্ষম হবে।