ইসরায়েলে আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। একইসঙ্গে তারা চ্যানেলটিকে হামাসের মুখপাত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
তবে ইসরায়েল সরকার সে দেশে কেবল আংশিকভাবে চ্যানেলটি বন্ধ করতে পেরেছে। চ্যানেলটি ইসরায়েলে ফেসবুকের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ চলাকালীন মন্ত্রিসভা এ বিষয়ে একমত হয়েছে।
রোববার জেরুজালেমের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে কাতারের সম্প্রচার মাধ্যমটির কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।
ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি এ বিষয়ে বলেছেন, অভিযানকালে টেলিভিশন নেটওয়ার্কটির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ ওই মন্ত্রীর পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মন্ত্রণালয়ের পুলিশ কর্মকর্তা ও পরিদর্শকরা একটি হোটেল কক্ষে প্রবেশ করছেন।
বিবিসির একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশ তাদের হোটেলে ঢুকে ভিডিও ধারণ করতে বাধা দেয়।
ইসরায়েলি স্যাটেলাইট সার্ভিস ইয়েস-এর প্রদর্শন করা বার্তায় বলা হয়েছে, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে, ইসরায়েলে আল জাজিরা স্টেশনের সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে আল জাজিরার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আল জাজিরা ইসরায়েলি নিরাপত্তার জন্য হুমকি- দেশটির এমন দাবি মিথ্যা ও বিপজ্জনক। চ্যানেলটি প্রতিটি আইনি পদক্ষেপ অনুসরণ করার অধিকার সংরক্ষণ করে।
এদিকে ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এফপিএ) ইসরায়েল সরকারকে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, দেশে আল জাজিরা বন্ধ করে দেয়া মুক্ত গণমাধ্যমের সমর্থকদের জন্য উদ্বেগের কারণ। ইসরায়েল স্টেশনটি নিষিদ্ধ করার জন্য কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলোর মতো একটি সন্দেহজনক ক্লাবে যোগ দিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ইসরায়েল সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে। এক্স-এ এক পোস্টে সংস্থাটি বলেছে, ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য একটি মুক্ত ও স্বাধীন মিডিয়া অপরিহার্য। এখন গাজা থেকে রিপোর্ট করার ক্ষেত্রেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলি সংসদ গত মাসে একটি আইন পাস করে, যাতে সরকারকে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত বিদেশি সম্প্রচার মাধ্যমকে সাময়িকভাবে বন্ধ করার ক্ষমতা দেয়া হয়।
গাজায় বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং আল জাজিরার কর্মীরা সেখানে একমাত্র সাংবাদিক ছিলেন।
ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে আল জাজিরার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে আসছে।