ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার এই প্রস্তাব পাস হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হওয়ার অর্থ হলো জাতিসংঘের কোনো সদস্য রাষ্ট্র এটি মানতে বাধ্য।
যুদ্ধবিরতি আহ্বান জানিয়ে পাস হওয়া এ প্রস্তাবে অবিলম্বে ও নিঃশর্তে হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তিরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পাল্টে এতে ভেটো দেয়নি। বাকি ১৪ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
ভোটাভুটির পর বক্তব্য দিতে গিয়ে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস হতে বিলম্ব হওয়ার জন্য গাজার শাসক দল হামাসকে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, আমরা রেজুরেশনের সবকিছুর সঙ্গে একমত হইনি। এ কারণেই ভোট দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
আল জাজিরার কূটনৈতিক সম্পাদক জেমস বেস বলেছেন, এটি ‘খুব, খুব গুরুত্বপূর্ণ’ উন্নয়ন। প্রায় ছয় মাস পর ... ভোট, প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে। গাজায় একটি স্থায়ী এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি করেছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তিনবার ভেটো দিয়েছে, তবে এবার এটি পাস করতে দিয়েছে।
জেমস বেস জানান, নিরাপত্তা পরিষদের পাস হওয়া প্রস্তাব মূলত আন্তর্জাতিক আইন। জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের জন্য এ আইন বাধ্যতামূলক হিসেবে দেখা হয়।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় দেশটি।
এ অবস্থায় গাজায় জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি ও ইরসায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ও গাজায় মানবিক সহায়তায় পাঠানোর শর্তে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
এরপর এই যুদ্ধবিরতি চলে সাত দিন। এই সাত দিনে হামাস ১১০ জনকে এবং ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে। তবে আন্তর্জাতিক নানা মহলের চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি।
হামলার সময় প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ইসরায়েল বলছে, গাজায় এখনো অনেক জিম্মি রয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েল নির্বিচারে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে গাজায় ৩২ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। এদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।