বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নওয়াজ শরিফ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৭:৪৭

ইমরানের অনুপস্থিতিতে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) নওয়াজ শরিফকে সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ৩৫ বছর বয়সী ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিও ভোটে জয়ের জন্য ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ মিলিয়ে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭ হাজারের বেশি প্রার্থী, ভোট দিচ্ছেন প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটার।

এই ভোটের মাধ্যমেই নির্বাচিত হবে আগামী পাঁচ বছর দেশটির শাসন ক্ষমতায় কারা থাকবেন। তবে বৈশ্বিক নানা গণমাধ্যম ও থিংক ট্যাংক বলছে, দেশটির এবারের নির্বাচনে জিততে চলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। এই অনুমান সঠিক হলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজের হবে এটি চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসা।

এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল। সেখানে বলা হয়, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান নেতা নওয়াজ শরিফ ২০২৪ সালের এই সাধারণ নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হবেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া এবং থিংক ট্যাংকগুলোর পাশাপাশি বিবিসি, গার্ডিয়ান এবং এএফপিসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়া আউটলেটগুলো অনুমান করছে।

এ বিষয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানিরা যখন সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেবে, তখন নওয়াজ শরিফকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাতে না পারাটা হবে আশ্চর্যজনক।

সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে বলছে, চতুর্থ দফায় ক্ষমতায় আসার পর নওয়াজ শরিফ সেই অভিযোগগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করার সুযোগ পাবেন, যেগুলোর কারণে তিনি ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীত্ব হারিয়েছিলেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে নওয়াজ শরিফকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কট্টর সমর্থকদের মোকাবিলা করতে হবে বলে ধারণা ওয়াশিংটন পোস্টের।

যুক্তরাষ্ট্রের টিভি ব্লুমবার্গের খবর, ‘গত সপ্তাহে করাচিতে পাকিস্তানের অভিজাত ব্যবসায়ীদের এক সমাবেশে দেয়া সাক্ষাৎকারে অনেক লোক বৃহস্পতিবারের এই নির্বাচনে ঝুলন্ত সংসদ এবং তারপর একটি দুর্বল জোট সরকার গঠন হতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। বেশিরভাগই আশা করছেন, সেই জোট সরকার নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বেই হবে। আবার তার ভাই শেহবাজের নেতৃত্বেও হতে পারে।’

সিএনএন বলছে, ‘নির্বাচনি প্রচারণার ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে এগিয়ে ছিলেন ইমরান খানের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফ। ৭৪ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী পুনরায় নির্বাচিত হতে চাইছেন এবং তেমনটি হলে বিদেশে কয়েক বছরের স্বেচ্ছানির্বাসনের পর এটি হবে নওয়াজের জন্য উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন।’

ওই প্রতিবেদনে সিএনএন আরও বলেছে, ‘নিহত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির কাছ থেকে নওয়াজ শরিফকে শক্তিশালী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। ৩৫ বছর বয়সী বিলাওয়াল এবারই প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন।’

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের পররাষ্ট্র নীতির ফেলো মাদিহা আফজালের মতে, নওয়াজ শরিফ যদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসেন, তাহলে তিনি দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। একটি হলো পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করা, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং অন্যটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঠিকঠাকভাবে সম্পর্ক পরিচালনা করা।

কিন্তু পিএমএল-এনের বিজয়ের সম্ভাবনা সত্ত্বেও এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিত ‘অত্যন্ত কম’ হতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

বার্তাসংস্থার এপির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘গত বছরের অক্টোবরে দেশে ফেরার পর আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত এবং কারাদণ্ডের রায় বাতিল করার পর চতুর্থ মেয়াদে শরিফের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার পরিষ্কার পথ হয়েছে। তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইমরান খান এখন কারাগারে থাকায় কার্যত ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো এবারও একই ধরনের মঞ্চ তৈরি হয়েছে। সে সময় নওয়াজ শরিফ আইনি বেড়াজালের সঙ্গে লড়াই করছিলেন এবং নির্বাচনে জিতে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। আর এবার ইমরান খান কারাগারে থাকায় বিশ্লেষকরা নওয়াজ শরিফের আরেকটি জয়ের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।

ইউএস থিংক ট্যাংক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউট উল্লেখ করেছে, ‘ভবিষ্যদ্বাণী হচ্ছে নওয়াজ শরিফ এবং তার দল পিএমএল-এন ক্ষমতার দৌড়ে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পিটিআই-সংশ্লিষ্ট স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি জয় তুলে নিতে পারে, তাহলে তা হবে বিশাল বিস্ময়কর। এ ছাড়া তেমন কিছু হলে তা পিটিআইয়ের জন্যও হবে অলৌকিক ঘটনা।

‘ইমরানের পিটিআই পাকিস্তানের বৃহত্তম দল হয়ে উঠেছে এবং ২০১৮ সালে দলটি এমন নির্বাচনে জয় পেয়েছিল, যে নির্বাচনের মাঠ ইমরানের খানের পক্ষে এবং নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে ছিল বলে বলা হয়ে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এবার আগের সেই পরিস্থিতিরও ওলটপালট হয়ে গেছে। সুতরাং, এবারের নির্বাচনটি এমন একটি নির্বাচন যার পরিবেশ ইমরান খানের বিরুদ্ধে এবং নওয়াজ শরিফের পক্ষে রয়েছে।’

আরেক ইউএস থিংক ট্যাংক ‘কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস’ বলেছে, ‘পাকিস্তানের রাজনীতিতে চূড়ান্তভাবে টিকে থাকা নওয়াজ শরিফের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এবং সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থন নিয়ে তার দলের সংসদের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার পথ পরিষ্কার করা হয়েছে। নওয়াজ শরিফ এমন একজন ব্যক্তি, যার নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং সামরিক বাহিনীর প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি নমনীয়।’

রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক রিপোর্ট করেছে, ‘নির্বাচনের পর নতুন নেতাকে দেশের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট এবং ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদ সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। এই অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো পাকিস্তানের পররাষ্ট্র নীতিকে প্রভাবিত করতে পারে, বিশেষ করে পাকিস্তানের প্রতিবেশী এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ লিখেছে, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী (নওয়াজ শরিফ) এবারের নির্বাচনে জোরালো লড়াইয়ের পরিবর্তে নতুন করে সরকার গঠনের আশা করছেন বলে মনে হচ্ছে। কারণ তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইমরান খানকে শাস্তির আওতায়ে ফেলে সাজা দেওয়া হয়েছে।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) প্রার্থীদের মধ্যে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দল গত জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল।

ইমরানের অনুপস্থিতিতে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) নওয়াজ শরিফকে সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ৩৫ বছর বয়সী ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিও ভোটে জয়ের জন্য ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ বিভাগের আরো খবর