কড়া নিরাপত্তা আর নানা আয়োজনে ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় উদ্বোধন হয়েছে রামমন্দির।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার দুপুরে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ নামের এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। শুরুতে পঞ্চপ্রদীপে রামলালার আরতি করেন মোদি। শঙ্খ-ঘণ্টাধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে অযোধ্যা।
মন্দির উদ্বোধন এবং রামলালার বিগ্রহে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ সম্পন্ন হয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। তিনিই ছিলেন অনুষ্ঠানের ‘প্রধান যজমান’।
মন্দিরের নিচ তলার উদ্বোধন করেন মোদি। মন্দিরের বাকি অংশেরর নির্মাণ কাজ শেষ হবে এ বছরের শেষ দিকে। ৭০ একরের একটি কমপ্লেক্সের ৭ দশমিক ২ একর জায়গাজুড়ে তিন তলা মন্দিরটি বানানো হয়েছে।
রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠান ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ ঘিরে নেয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৮০০০ আমন্ত্রিত অতিথি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এদের মধ্যে ক্রিকেট তারকা, বলিউড তারকাও আছেন।
নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে পুরো এলাকা। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে পরিস্থিতি।হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছড়িয়ে দেয়া হয়ৈছে অযোধ্যা নগরীতে।
রামমন্দির প্রতিষ্ঠা ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকারের অন্যতম রাজনৈতিক অঙ্গীকার। তবে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও যাননি এতে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ১৫২৮ সালে অযোধ্যায় মসজিদ তৈরি করেন মোগল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাঁকি, পরে এটি বাবরি মসজিদ নামে পরিচিত হয়। হিন্দুদের দাবি, রাম জন্মভূমিতে ‘রামের মন্দির ভেঙে’ মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে।
ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। তার পর অযোধ্যাসহ পুরো দেশে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়ায়, তাতে অন্তত ২ হাজার মানুষ মারা যান।
এরপরে হিন্দু আর মুসলমান-দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট, তারপর সুপ্রিম কোর্টে লম্বা আইনি লড়াই চলে। হিন্দু সংগঠনগুলোর বক্তব্য ছিল, বাবরি মসজিদ আসলে রাম জন্মভূমি আর তা বানানো হয়েছিল একটি মন্দির ধ্বংস করেই।
সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ২০১৯ সালে এক ঐতিহাসিক রায়ে জানায়, বাবরি মসজিদ অন্যায় ভাবে ভাঙা হয়েছিল। তবে শীর্ষ আদালত এটাও নির্দেশ দিয়েছিল যে, অযোধ্যায় বিতর্কিত জমিতে মন্দির তৈরি হবে।
আদালতের নির্দেশেই অযোধ্যা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ধন্নিপুরে একটা নতুন মসজিদ বানানোর জন্য জায়গা দেয়া হয়।